জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা বলেছি কারও ওপর প্রতিশোধ নেবো না। প্রতিশোধ নেওয়ার মানে হলো আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া। যেখানেই আইন হাতে তুলে নেওয়া হয়েছে, সেখানেই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিশোধ প্রতিহিংসার জন্ম দেয়, যুগ যুগ চলতে থাকে। তাই আমরা চাই, আইন হাতে তুলে নেওয়ার নোংরা সংস্কৃতির সমাপ্তি হোক। তবে ন্যায় প্রতিষ্ঠায় আমাদের দাবি হলো, যারা অপরাধ করেছে তাদের আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে শাস্তি পেতে হবে। বেআইনিভাবে নয়।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিরাজগঞ্জ দারুল ইসলাম একাডেমি মাঠে আয়োজিত দলের রোকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শফিকুর রহমান এ কথা বলেন। জেলা জামায়াতের আমির শাহীনুর আলম এতে সভাপতিত্ব করেন।
আমরা সমালোচনাকে অভিনন্দন জানাই ও উৎসাহ দেই দাবি করে জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, সবাই আমার মনের মতো পছন্দের কথা বলবেন না, এটা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। এ জন্য সমালোচনা সহ্য করার মানসিকতা আমাদের থাকতে হবে। যারা সমালোচনা করেন, তারাই আমাদের প্রকৃত বন্ধু। যারা আমার সমালোচনা করেন না, আমার ভুল দেখেও নীরব থাকেন, তারা আমার বন্ধু হতে পারেন না।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সাড়ে ১৫ বছর আপনারা স্বাধীন ছিলেন না। ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় হোক আপনারাও মজলুম দলগুলোর বিরুদ্ধে কলম চালিয়েছেন। অনেকেই বলেন, চাপের জন্য আপনারা অসহায় ছিলেন। এ জন্য আপনাদের দায়ী করব না। আল্লাহ এখন আপনাদের কণ্ঠ মুক্ত করে দিয়েছেন। আপনাদের কাছে অনুরোধ, এখন যেন আপনাদের বিবেক অনুযায়ী এই পবিত্র দায়িত্ব পালন করতে পারেন।
এখন জাতীয় ঐক্যের বড়ই প্রয়োজন মন্তব্য করে শফিকুর রহমান বলেন, জাতির মৌলিক ইস্যুতে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সব দল তার নিজস্ব জায়গা থেকে রাজনীতি করবে, বিবেকের তাড়নায় যা বলার তা বলবে, বর্তমান সরকারেরও প্রয়োজনীয় সমালোচনা করবে। আবার এই সরকার যেন সংস্কারের কাজগুলো সঠিকভাবে করতে পারে, সে জন্য পর্যাপ্ত সহযোগিতাও দেবে। এভাবে ভারসাম্যপূর্ণ রাজনীতির মধ্যে দিয়ে সবাই এগিয়ে যাক। দল ও মত ভিন্ন থাকবে, এটিই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।’
আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরে জামায়াতে ইসলামী সব চেয়ে বেশি জুলুম-নির্যাতনের শিকার বলে মন্তব্য করে শফিকুর রহমান বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশ তার মুক্তির যে পথে উঠেছে, গন্তব্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত সেটি চলতে থাকুক। কোনো অপশক্তি যদি বাংলাদেশকে এই রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে চায়, তাহলে দেশের ১৮ কোটি মানুষের ৩৬ কোটি হাত তাদের প্রতিহত করে দেবে ইনশা আল্লাহ।
জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় ও জেলা জামায়াতের আমির শাহীনুর আলমের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খাঁন, অর্থ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন ও ঢাকা দক্ষিণের নায়েবে আমির ড. হেলাল উদ্দিন প্রমুখ সহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।