সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ে বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। রোববার (৫ নভেম্বর) ভোর ৬টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়। দলটির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা অন্য দলগুলোও এ কর্মসূচি পালন করবে।
এদিকে, জামায়াতে ইসলামীও আলাদা করে ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে।
গত ২ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিকেলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, রোববার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গত ২ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, রোববার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে
এদিকে, অবরোধের আগের দিন শনিবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে আটটার মধ্যে রাজধানীর নিউ মার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড ও সায়েদাবাদে তিনটি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে, এসব আগুনে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে, বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধেও দেশে সব ধরনের পরিবহন চালানোর ঘোষণা দিয়েছে পরিবহন মালিক সমিতি।
অবরোধের আগের দিন শনিবার সন্ধ্যার পর রাজধানীর পৃথক চার স্থানে চারটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা / ছবি- সংগৃহীত
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক সামদানী খন্দকার জানান, বিএনপি-জামায়াতের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধে ঢাকাসহ সারা দেশে বাস-মিনিবাস চলাচল অব্যাহত থাকবে। সব রুটে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য সমিতি বা কোম্পানিভুক্ত মালিকদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এ ছাড়া, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নেওয়ার প্রতিবাদে রোববার চট্টগ্রামে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি।
মহানগর বিএনপি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে বলা হয়, চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগরে সর্বাত্মকভাবে এ কর্মসূচি পালন করা হবে। তবে, অ্যাম্বুলেন্স, সংবাদপত্রবাহী ও সাংবাদিকদের বহনকারী যানবাহন, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে। পাশাপাশি রোববার ও সোমবার বিএনপির ডাকা দেশব্যাপী দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচিও চলমান থাকবে।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বড় ধরনের সমাবেশ করে বিএনপি, জামায়াত ও আওয়ামী লীগ। সেদিন দুপুরের দিকে বিএনপির সমাবেশে আসা লোকজনের সঙ্গে কাকরাইল মোড়ের কাছে আওয়ামী লীগের সমাবেশগামী লোকজনের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ সেখানে হস্তক্ষেপ করার পর একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা হয় এবং বেশকিছু গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। উপস্থিত সাংবাদিকদেরও ব্যাপক মারধর করা হয়। এরপর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও উপর্যুপরি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিএনপির সমাবেশ ভন্ডুল করে দেয়। ফলে সংঘর্ষ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে এক পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় এবং পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালানো হয়।
সমাবেশ বানচালের প্রতিবাদে পরের দিন (২৯ অক্টোবর) বিএনপি হরতাল পালন করে। এক দিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি দেওয়া হয়।
এদিকে, হরতালের দিন এবং পরবর্তী কয়েক দিনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।