রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে মানুষ পুড়িয়ে বিএনপি কী অর্জন করতে চায়, সে প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষ পুড়িয়ে নির্বাচন বন্ধ বাংলার মাটিতে হবে না।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) গণভবনে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিন উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রেলে আগুন, স্লিপার কাটা, জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে মারা, বাসে আগুন, আগুন নিয়ে খেলা—এগুলো কোন রাজনীতি? কয়েকদিন আগে ট্রেনে আগুন দিয়েছে, একজন মা তার সন্তানকে বুকে ধরে পুড়ে মারা গেছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে কী ধরনের অর্জন করছে, সেটাই আমার প্রশ্ন।
তিনি বলেন, মানুষের কাছে যেতে হবে তাদের কল্যাণের কথা বলে, তাদের উন্নয়নের কথা বলে। কিন্তু, মানুষ পুড়িয়ে নির্বাচন বন্ধ করে ফায়দা লুটবে, এটা বাংলার মাটিতে চলবে না। আমি ধিক্কার জানাই, যারা হুমুক দেয় এবং এখানে তা বাস্তবায়ন করে। এটা তো অন্যায়। এই অন্যায় মেনে নেওয়া যায় না।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের শুরুতে বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষদের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, যিশু খ্রিষ্ট আমাদের শিখিয়েছেন, মানব ধর্ম, মানুষের প্রতি ভালোবাসা। আসলে সব ধর্মের মূল কথাই এক—সেটা হচ্ছে, মানুষের কল্যাণ, মানুষের মঙ্গল। আমরা যদি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এ কথাগুলো মেনে চলি, তাহলে কোনো সংঘাত থাকে না। আমরা শান্তি চাই। আমরা চাই না যে, সংঘাত হোক।
জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে বাংলাদেশের শোষিত-বঞ্চিত মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য দেশে ফিরে আসার কথা জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, এখানে কোনো মানুষ শোষিত-বঞ্চিত থাকবে, সেটা হতে পারে না। একটা সমাজ ব্যবস্থা হবে, যে সমাজ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ধনী-দরিদ্র সবার মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারবে। আমাদের প্রচেষ্টা সেটাই। সে অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
বাংলাদেশে হাজার বছর ধরে সব সম্প্রদায়ের মানুষ একসাথে বসবাস করছে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আমরা সেভাবেই দেশকে গড়ে তুলতে চাই। যদিও মাঝে অনেক বাধা এসেছে, বিপত্তি এসেছে। কিন্তু, যখন থেকে আওয়ামী লীগ সরকার এসেছে, তখন থেকে এই নীতি আমরা মেনে চলছি। স্বাধীনভাবে সব ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। সেজন্যেই আমি বলেছি যে, ধর্ম যার যার উৎসব সবার।
‘এ দেশের সব ধর্মের উৎসব কিন্তু সবাই একসাথে পালন করে। এটা বোধহয় বিশ্বের কাছে একটা বিরাট দৃষ্টান্ত। এটা আমরা ধরে রাখতে চাই।‘
এ সময় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের কল্যাণে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষের ক্ষতি করা, এটা কখনো কাম্য না, এ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্মীয় সংঘাত হোক, এটা আমরা চাই না। প্রত্যেকে যার যার বিশ্বাস নিয়ে চলবে।
দেশের মানুষ আস্থা রাখার কারণে আজ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ, উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনা আর যুদ্ধ না হলে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতাম।