ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ঘটনায় অভিযান চালিয়ে কলকাতার কৃষ্ণমাটি সেতু সংলগ্ন এলাকার বাগজোলা খাল থেকে কিছু হাড় উদ্ধার করেছে কলকাতার সিআইডি। সঙ্গে ছিল পুলিশ ও নৌবাহিনীর ডিএমজি টিম।
তবে হাড়গুলো এমপি আনারের কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়। রোববার সকালে এ অভিযান চালানো হয়।শুক্রবার (৭ জুন) বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ এলাকা থেকে সিয়ামকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (সিআইডি)। পরদিন শনিবার তাকে ১৪ দিনের জন্য সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন বারাসাত জেলা ও দায়রা আদালত।
শনিবার সারারাত ধরে সিয়াম হোসেনকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চালান সিআইডির কর্মকর্তারা। জিজ্ঞাসাবাদে সিয়াম হোসেন সিআইডিকে বেশ কিছু তথ্য জানান।
রোববার সকালে সিয়াম হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে বাগজোলা খালে আসেন সিআইডি কর্মকর্তারা। যে স্থানে এমপি আনারের দেহাংশ ফেলা হয় সেই স্থানটি দেখিয়ে দেন সিয়াম হোসেন। তারপর সেখানে ভারতীয় নৌবাহিনীর তিন সদস্যের দল ও কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা মিলে তল্লাশি অভিযান চালান।
তল্লাশি অভিযানে বেশ কিছু হাড় উদ্ধার করা হয়। হাড়গুলো উদ্ধার করে ফরেনসিক টেস্টে পাঠানোর ব্যবস্থা করছে সিআইডি। তবে সেই হাড়গুলো মানুষের না অন্য কিছুর তা জানা যাবে, ফরেনসিক পরীক্ষার পর।
সিয়ামের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ), ৩০২ (অপরাধমূলক নরহত্যা।), ২০১ (তথ্যপ্রমাণ লোপাট) এবং ৩৪ (সংঘবদ্ধভাবে অপরাধমূলক কাজ সংঘটিত করা)- এই চার জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দেওয়া হয়েছে।
এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারকে কলকাতার সঞ্জীবা গার্ডেনসের যে ফ্ল্যাটে হত্যা করা হয় সেই ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংক থেকে গত ২৮ মে মরদেহের খণ্ডাংশ উদ্ধার করে কলকাতা পুলিশ। তবে সেগুলো এমপি আনারের মরদেহের খণ্ডাংশ কি না সেটা এখনো নিশ্চিত করেনি পুলিশ।
গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান এমপি আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ আনোয়ারুল আজীম।
বাড়ি থেকে বেরোনোর পাঁচদিন পরে গত ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনোয়ারুল আজীম নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলে না তিনবারের এই সংসদ সদস্যের। বুধবার (২২ মে) হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী নিউটাউন এলাকায় বহুতল সঞ্জীবা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে আনোয়ারুল আজীম খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া গেছে রক্তের ছাপ।