দীর্ঘ ফুটবল ক্যারিয়ারে পায়ের জাদুতে গোটা বিশ্বকে মুগ্ধ করে রেখেছিলেন যে ফুটবলার, বির্তকের উর্ধ্বে সবার কাছেই সেই নাম লিওনেল মেসি।
তার বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে নানা অর্জন বিমোহিত করে ফুটবলপ্রেমীদের। কাতার বিশ্বকাপে সোনালী ট্রফি নিজেদের করে যেন নিজের ক্যারিয়ারের অপূর্ণতাও ঘুচিয়েছেন ফুটবলের এই জাদুকর।
অনেকেই ভেবেছিলেন, বিশ্বকাপের পর ফুটবল থেকে অবসর নেবেন মেসি। কিন্তু, তিন তারকা জার্সিতে আরও খেলবেনন বলে জানান। তবে এবার মেসি জানালেন, ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলবেন না।
সম্প্রতি টাইটান স্পোর্টসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেন, আমি আগেও বলেছি, এটিই আমার শেষ বিশ্বকাপ। জানি না সামনে কী হবে। তবে, আমার দিক থেকে পরিষ্কার। সামনের বিশ্বকাপে যাচ্ছি না আমি।
মধ্য আর্জেন্টিনায় জন্ম এবং বেড়ে ওঠা মেসি মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাসালোনার সাথে চুক্তিবদ্ধ হন এবং স্পেনে পাড়ি জমান। ২০০৪ সালের অক্টোবরে ১৭ বছর বয়সে বার্সেলোনার মূল দলে তাঁর অভিষেক হয়। ২০০৫ সালে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে অভিষেক হয় মেসির।২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপ এ গোল করার মধ্য দিয়ে তিনি সর্বকনিষ্ঠ আর্জেন্টাইন হিসেবে বিশ্বকাপে গোল করার কৃতিত্ব অর্জন করেন।
২০০৭ সালের ব্যালন ডি’অর পুরস্কারে তৃতীয় ও ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কারে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। ২০০৮-০৯ মৌসুমে তিনি বার্সেলোনার মূল দলের নিয়মিত খেলোয়াড়ে পরিণত হন। ২০০৮ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে আর্জেন্টিনার হয়ে ফুটবলে স্বর্ণপদক জয় করেন।
২০১১ সালের আগস্টে তিনি আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়কে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০১৪ বিশ্বকাপে গোল্ডেন বল পুরস্কার অর্জন করেন। ২০২১ কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনা মেসির নেতৃত্বে বিজয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করে। ২০২২ সালে আর্জেন্টিনাকে ফাইনালিসিমা জিতিয়ে দেন মেসি।
সর্বশেষ কাতার বিশ্বকাপে অসাধারণ ফুটবলশৈলী দেখিয়ে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপের শিরোপা নিজেদের করে নেয় আর্জেন্টিনা। যেখানে নেতার মতো সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন ফুটবলের এই জাদুকর। জিতে নেন গোল্ডেন বলও।
নিজের ছন্দময় অর্জনে টানা ৪বার সহ মোট ৭বার ব্যালন ডি অর জিতেন এ তারকা।
বর্নাঢ্য এ ক্যারিয়ারে বার্সেলোনার হয়ে মেসি ৭৭৮ ম্যাচে ৬৭২ টি গোল করেন। এর মধ্যে লা লিগাতে ৪৩৭ টি এবং উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে রয়েছে ১১৪ টি। ২০০৫ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে অভিষেকের পর থেকে ১৭৪ ম্যাচে ১০২টি গোল করেছেন। যার মধ্যে ৪টি বিশ্বকাপে রয়েছে ১৩টি। সর্বশেষ ক্লাব পিএসজিতে মেসি ৭৪ ম্যাচে ৩২ গোল করেন। যার মধ্যে লিগ ওয়ানে রয়েছে ২২টি এবং উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে রয়েছে ৯টি।
খেলার মাঠে দেখা না গেলে বর্নাঢ্য অর্জনও ছন্দময় খেলায় এ তারকা থেকে যাবেন ভক্তদের হৃদয়ে, থাকবেন অনুপ্রেরণা হয়ে।