চট্টগ্রামের ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে হতশ্রী ব্যাটিংয়ে দুইশো রানও পেরোতে পারল না বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার রেকর্ড ৫৩১ রানের জবাবে টিম টাইগার্সের ইনিংস গুটিয়ে গেছে মোটে ১৭৮ রানে। এখন চাইলে স্বাগতিকের ফলো-অনে ফেলতে পারবে সফরকারী শ্রীলঙ্কা।
এ নিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলতি টেস্ট সিরিজের তিন ইনিংসেই দুইশোর কম রানে গুটিয়ে গেল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। ওপেনার জাকির হাসান ছাড়া সবাই ব্যর্থ হয়েছেন। বরাবরের মতোই টেস্ট মেজাজে খেলেছেন মুমিনুল। কিন্তু অপরপাশে তাকে সঙ্গ দেওয়ার মতো ছিল না কেউই।
এমসিসির ১৪.১.১ আইন অনুযায়ী, ৫ দিনের টেস্টে কোন দলের তুলনায় ২০০ বা তারচেয়ে বেশি লিড পেলেই একটি দল তার প্রতিপক্ষকে ফলো-অনে পাঠাতে পারে। সেই হিসেবে ৫৩১ রান করা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফলো-অন এড়াতে বাংলাদেশের দরকার ছিল ৩৩১ রান। কিন্তু স্বাগতিকরা গুটিয়ে গেছে ১৭৮ রানে। অর্থাৎ ৩৫৩ রানে পিছিয়ে থেকে ইনিংস শেষ করেছে বাংলাদেশ। লঙ্কানরা চাইলে বাংলাদেশকে ফলো-অনে পাঠাতে পারে।
আজ (সোমবার) চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনে ১ উইকেটে ৫৫ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। এদিন ব্যাট হাতে সকালটা খারাপ কাটেনি টিম টাইগার্সের। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার জাকির হাসান নাইটওয়াচম্যান তাইজুল ইসলাম মিলে বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করেছেন। যদিও ব্যক্তিগত ফিফটির পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি জাকির।
ভিশ্ব ফার্নান্দোর দারুণ এক ডেলিভারিতে ফেরেন জাকির। ভেতরের দিকে ঢোকা বল জাকিরের রক্ষণ ভেদ করে উপড়ে ফেলেছে লেগ স্টাম্প। ৮ চারে ১০৪ বলে ৫৪ রান করে ফিরলেন জাকির। তার বিদায়ে ভাঙে ১২২ বলে ৪৯ রানের জুটি।
জাকিরের বিদায়ের পর যেন পথ হারিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশও। দলীয় ৯৬ রান থেকে ৯ রান যোগ করতেই আরও দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। একে একে ফিরেছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত এবং শেষমেশ নাইটওয়াচম্যান তাইজুলও।
তাইজুল ইসলামের আউটের পর মুমিনুলের সঙ্গে যোগ দেন সাকিব আল হাসান। এই দুজনে কিছুটা সময় নিয়ে খেলতে চাইলেও সেই চেষ্টা সফল হয়নি তাদের। সাকিব অবশ্য এমন আউটের পেছনে ভাগ্যকে দোষ দিতেই পারেন। অনেকটা সুইং করেছিল বল। ব্যাটে-বলে সংযোগ হয়নি। বল প্যাডে লাগার পর আম্পায়ার লঙ্কানদের আবেদনে সাড়া দিয়ে আউটের সংকেত দেন। সাকিব রিভিউ নিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত আম্পায়ার্স কলে ফিরতে হয় তাকে।
দুই বল পরেই আসিথা ফার্নান্দো আবার আঘাত হানেন। এবার আউট হয়েছেন লিটন দাস। উইকেটের পেছনে সহজ ক্যাচ নিয়েছেন কুশাল মেন্ডিস। ইনিংস বড় করা হয়নি শাহাদাত দীপুরও। ৮ রানে আউট হয়েছেন লাহিরু কুমারার বলে। বল ব্যাটের কানায় লেগে গেছে স্লিপে। নিচু হয়ে সেটি নিয়েছেন কামিন্দু মেন্ডিস। মিরাজ এসে জীবন পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। প্রভাত জয়সুরিয়ার বলে এলবিডব্লিউর শিকার এই অলরাউন্ডার।
একদিকে টিকে ছিলেন মুমিনুল হক। আসিথা ফার্নান্ডোর ফুললেংথের বলে এলবিডব্লু হয়েছেন তিনি। ৮৪ বলে ৩৩ রান করে ফিরেছেন তিনি। সাকিবের মতোই দূর্ভাগ্য তার। আম্পায়ার্স কল হওয়াতে ফিরতে হয়েছে এই ব্যাটারকে। আউট হওয়ার আগে অবশ্য টেস্ট ক্যারিয়ারে ৪ হাজার রান পূরণ করেছেন তিনি। শেষ উইকেট হিসেবে আউট হয়েছেন খালেদ। আসিথার চতুর্থ শিকার তিনি। বোল্ড হয়েছেন ১ রান করে।