আগামী ১৫ আগস্টে বাংলাদেশের সাইবার জগতের ওপর হামলার হুমকি দিয়েছে হ্যাকারদের একটি দল। হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (বিজিডি ই-গভ সার্ট) থেকে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
শুক্রবার বিজিডি ই-গভ সার্ট এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানায়।
বিজিডি ই-গভ সার্ট প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম খান স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, গত ৩১ জুলাই এক হ্যাকার দল জানিয়েছে, ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের সাইবার জগতে সাইবার আক্রমণের ঝড় আসবে।
এর ফলে অবকাঠামো রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিজিডি ই-গভ সার্ট এই সম্ভাব্য সাইবার হামলা থেকে সুরক্ষা পেতে সতর্ক করছে। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোসহ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা এবং সব ধরনের সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সম্ভাব্য সাইবার হামলার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই হ্যাকার গোষ্ঠী নিজেদের ‘হ্যাকটিভিস্ট’ দাবি করে এবং তারা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে হামলার লক্ষ্য বানিয়েছে। বিজিডি ই-গভ সার্ট জানিয়েছে, তাদের সাম্প্রতিক গবেষণায় একই মতাদর্শে প্রভাবিত বেশ কয়েকটি হ্যাকার দলকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যারা অবিরাম বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে নিয়মিত সাইবার-আক্রমণ পরিচালনা করে আসছে। বিজিডি ই-গভ সার্ট তাদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যে স্ক্রিনশট দিয়েছে, তাতে দেখা যায়, হুমকিদাতারা নিজেদের ভারতীয় হ্যাকার গোষ্ঠী বলে দাবি করেছে।
বিজিডি ই-গভ সার্ট বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে সম্প্রতি উল্লেখযোগ্য সাইবার হামলার কিছু ঘটনার কথা উল্লেখ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ১ আগস্ট একটি হ্যাকার গ্রুপ বাংলাদেশে পেমেন্ট গেটওয়ে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং ব্যাংক খাতে একটি সাইবার আক্রমণের দাবি করে। এ ছাড়া ৩ জুলাই একটি হ্যাকার গ্রুপ দাবি করে যে বাংলাদেশি পরিবহন পরিষেবার ওপর ১ ঘণ্টার জন্য তারা ডিডস আক্রমণ করেছিল। গত ২৭ জুন একটি হ্যাকার গোষ্ঠী বাংলাদেশের একটি সরকারি কলেজের ওয়েবসাইটকে বিকৃত করেছে এবং তারা তাদের কাজের একটি নমুনাও প্রকাশ করেছে। একই কাজ করা হয়েছে স্বাস্থ্য খাতের একটি প্রতিষ্ঠানের সাইটে ২৪ জুন।
সাইবার হামলা এড়াতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছু পরামর্শ দিয়েছে সার্ট। সেগুলো হলো ২৪ ঘণ্টা বিশেষ করে অফিস সূচির বাইরের সময়ে নেটওয়ার্ক অবকাঠামোতে নজরদারি রাখা এবং কেউ তথ্য সরিয়ে নিচ্ছে কি না, তা খেয়াল রাখা। ইনকামিং এইচটিটিপি/এইচটিটিপিএস ট্রাফিক বিশ্লেষণের জন্য ফায়ারওয়াল স্থাপন এবং ক্ষতিকারক অনুরোধ এবং ট্রাফিক প্যাটার্ন ফিল্টার করা। ডিএনএস, এনটিপি এবং নেটওয়ার্ক মিডলবক্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা সুরক্ষিত রাখা। ব্যবহারকারীদের ইনপুট যাচাই করা। ওয়েবসাইটের ব্যাকআপ রাখা। এসএসএল/টিএলএস এনক্রিপশনসহ ওয়েবসাইটে এইচটিটিপিএস প্রয়োগ করা। হালনাগাদ প্রযুক্তি ব্যবহার করা এবং সন্দেহজনক কোনো কিছু নজরে এলে বিজিডি ই-গভ সার্টকে জানানো।