যান চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় ব্রিটিশ আমলে তৈরি সোনাহাট স্থলবন্দর সড়কের সোনাহাট ব্রিজটি দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। মেরামতের জন্য ১৪ দিন ব্রিজটি সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম।
স্থানীয় সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ০৭ থেকে ২০ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত ১৪ দিন সোনাহাট সেতু মেরামত ও সংস্কার কাজ চলার সময় স্থল বন্দর থেকে ঢাকা অভিমুখী ও ঢাকা থেকে স্থলবন্দর অভিমুখী ভারী পণ্যবাহী ট্রাক ও সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবাহক ঐতিহাসিক ও প্রাচীন ব্রিটিশ আমলে বাংলা-আসাম রেলপথ নির্মাণের সময় ৬০০ মিটার দৈর্ঘের সোনাহাট রেলওয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন সেতুটির তিনটি গার্ডার ভেঙে দেওয়া হলে যুদ্ধের পর এখান থেকে দুটি গার্ডার খুলে নিয়ে তিস্তা রেলওয়ে সেতুতে স্থাপন করে কর্তৃপক্ষ।
ব্রিটিশ শাসন আমলে ১৮৮৭ সালে লালমনিরহাট থেকে ভারতের গৌহাটি পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করা হয়। তারই অংশ হিসেবে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমার নদের ওপর নির্মিত হয় সোনাহাট রেলসেতু। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যদের প্রবেশ ঠেকাতে সেতুটির একটি অংশ ভেঙে দেওয়া হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার দীর্ঘ দিন পর এরশাদ সরকারের আমলে সেতুটি মেরামত করে ভূরুঙ্গামারী দক্ষিণের তিন ইউনিয়ন, কচাকাটা ও মাদারগঞ্জের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সচল করা হয়।
নির্মাণকালে সেতুটির আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০০ বছর। সে মতে সোনাহাট সেতুর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে অনেক আগেই। নড়বড়ে সেতুটি যে কোনো সময় ভেঙে পড়ে ঘটতে পাড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। বন্ধ হয়ে যেতে পারে সোনাহাট স্থল বন্দরের যাবতীয় কার্যক্রম।
কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, ব্রিজে প্লেটগুলো আগের থেকে অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতেই সংস্কারের জন্য প্রতিদিন নির্ধারিত সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ব্রিজের সব প্লেট খুলে কাজ করতে হবে এতে সময় লাগতে পারে প্রায় ১৫-২০ দিন। সংস্কার কাজ শেষ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
পাশাপাশি এই রেলসেতুর পাশে প্রায় ২৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৫৪ মিটার দৈঘের্যর সড়ক সেতুর নির্মাণ কাজও চলমান রয়েছে।