ঢাকা | বৃহস্পতিবার | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭:১১ অপরাহ্ণ
ফিচারহিট স্ট্রোকের লক্ষণগুলো কি?

হিট স্ট্রোকের লক্ষণগুলো কি?

spot_img

পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। সঙ্গে বাড়ছে হিট স্ট্রোক বা সান স্ট্রোকের ঝুঁকি। হিট স্ট্রোকের কিছু লক্ষণ রয়েছে। সেগুলো জানা থাকলে নিজে যেমন সচেতন থাকা যায়, অন্যদের দিকেও খেয়াল রাখা যায়।

হিট স্ট্রোকের লক্ষণগুলো কি?
১. শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যায়।
২.ত্বক শুষ্ক ও লালচে হয়ে যায়। ঘাম বন্ধ হয়ে যেতে পারে
৩. রোগী খুব দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়
৪. নাড়ির স্পন্দন ক্ষীণ ও দ্রুত হয়।৫. রক্তচাপ কমে যায়।
৬. খিঁচুনি, মাথা ঝিমঝিম করা, অস্বাভাবিক আচরণ
৭. প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায় ও হলুদ রঙের হওয়া
৮. রোগী শকে চলে যেতে পারে। এমনকি পড়ে গিয়ে সাময়িক অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।

হিট স্ট্রোক কাদের বেশি সম্ভাবনা?
প্রচণ্ড গরমে ও আর্দ্রতায় যারা বেশি সময় ধরে গরমে কাজ করছেন যে-কারও হিট স্ট্রোক হতে পারে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যেমন—

১. শিশু ও বৃদ্ধদের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কম থাকায় হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেক বেশি।
২. যারা দিনের বেলায় প্রচণ্ড রোদে কায়িক পরিশ্রম করেন, তাদের হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। যেমন— কৃষক, শ্রমিক, রিকশাচালক, দিনমজুর, কন্সট্রাকশন লেবার ইত্যাদি।
৩. শরীরে ডিহাইড্রেশন হলে অর্থাৎ জল কম পান করলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে ও যাদের শরীরে অত্যাধিক ঘামের মধ্যে জল ও খনিজ বেরিয়ে যায়।
৪. কিছু কিছু ওষুধ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় বিশেষ করে যারা ডাইইউরেটিক গ্রুপের ওষুধ খান তাদের শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দেয়।

হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায়-
১. যেহেতু আমরা কারণ সম্পর্কে জেনে গেছি সেহেতু প্রতিরোধের উপায় আমাদের সহজে বোধগম্য হবে। গরমে যেহেতু ঘামের মাধ্যমে জলের পরিমাণ কমে যাচ্ছে সেহেতু প্রচুর পরিমানে জল খেয়ে শরীরকে হাইড্রেট করতে হবে। ইলেক্ট্রোলাইট ঘাটতি মেটাতে জলের সাথে ORS মিশিয়ে নিতে হবে। নাহলে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ৪ টেবিল চামচ চিনি ও ১ চামচ লবন এক লিটার জলে মিশিয়ে ব্যাগে রাখুন। ঘণ্টায় ঘণ্টায় এই জল পান করতে থাকুন। জলের পাশাপাশি ফলের জুস (লেবু, বেল, তরমুজ) খেতে পারেন। কিডনি ও প্রেশারের রুগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ মত জল পান করুন।
২. পোশাক পরুন ঢিলেঢালা, সুতির কাপড়ের ও হালকা রঙের। গরমে আঁটোসাটো পোষাক থেকে শরীরকে রেহাই দিন। ফুল স্লিভ জামা বা কাপড় ব্যবহার করুন যাতে শরীরের বেশিরভাগ অংশ ঢাকা থাকে। নরম কাপড়ের অন্তর্বাস অবশ্যই ব্যবহার করুন। যাতে দ্রুত ঘাম শুষে নিয়ে আপনার শরীরকে ঠাণ্ডা রাখবে।
৩. বাইরে বেরোলে অবশ্যই ছাতা, টুপি,সানগ্লাস ব্যবহার করুন। ঘণ্টায় ঘণ্টায় ঠান্ডা জল দিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে নিন। ওয়েট ওয়াইপ রাখতে পারেন সাথে।
৪. ত্বক অনুযায়ী সঠিক সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। যাদের ত্বক বেশি সেন্সিটিভ প্যারাবেন কিংবা অক্সিবেনজোন জাতীয় কেমিক্যাল যুক্ত সানস্ক্রিন এড়িয়ে চলুন। টাইটানিয়াম ডাইঅক্সাইড বা জিঙ্ক অক্সাইড জাতীয় উপাদান থাকা সানস্ক্রিন সেনসিটিভ ত্বকের জন্য উপকারী। সূর্যের তাপ থেকে ত্বককে রক্ষা করে এই উপাদানগুলি। যাদের ত্বকে বেশি তৈল যুক্ত তারা ওয়েল বেসড সানস্ক্রিন এড়িয়ে চলুন এবং যাদের ড্রাই স্কিন বা শুষ্ক ত্বক তাঁরা অবশ্যই ময়শ্চারাইজিং সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন। বাইরে যাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট আগে মেখে নিতে হবে। সম্ভব হলে ২ ঘন্টা বাদে আরও একবার মেখে নিতে হবে।
৫. গরমের সময় ফাস্টফুডকে না বলুন। কেননা, এতে থাকা অতিরিক্ত লবন, তেল গরমে আপনার শরীরকে আরও বেশি ক্ষতি করবে। বাইরের খোলা খাবার থেকে বিরত থাকুন। ঘরোয়া হালকা খাবারে জোর দিন।
৬. প্রচণ্ড গরমে শরীরে যাতে ঘাম না জমে তার জন্য সম্ভব হলে হালকা রুমাল জলে ভিজিয়ে গা মুছে নিন। বাড়িতে থাকলে একধিকবার স্নান করুন।
৭. হঠাৎ বাইরে থেকে এসে এসি তে বসবেন না বা হঠাৎ এসি থেকে বেরিয়ে অতিরিক্ত গরমে যাবেন না।
৮. গরমে চা, কফি, কোল্ড ড্রিঙ্কস খাবেন না।
৯. দীর্ঘক্ষণ প্রখর রোদে দাঁড়িয়ে থাকবেন না। এতে রক্তচাপ কমে যেতে পারে।

spot_img

সম্পর্কিত আরো খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ খবর