![](https://i0.wp.com/muktokolom.news/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png?w=696&ssl=1)
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে তিস্তা-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। পাশাপাশি বৈঠকে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। যার মধ্যে আছে কৃষি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি এবং পারস্পরিক লেনদেন আরও সহজ করা।
শুক্রবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-ভারত বিদ্যমান গভীর সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে একমত হয়েছেন দুই প্রধানমন্ত্রী। উভয় দেশের মধ্যকার অনিষ্পন্ন সমস্যা সমাধানে আলোচনার তাগিদ দেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের সহযোগিতা চেয়েছেন বলে জানান ড. মোমেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে তিনি এটাও জানিয়েছেন, কিছুক্ষণ প্রধানমন্ত্রী মোদী ও শেখ হাসিনা একান্তে আলোচনাও করেছেন। এই একান্ত বৈঠকে কি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে? মোমেন বলেছেন, তিনি এই বিষয়ে কিছু জানেন না।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা স্মরণ করেন। জি-২০ তে তাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষভাবে ধন্যবাদও জানিয়েছেন। গ্লোবাল সাউথের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়কে জি-২০-তে তুলে ধরার জন্য তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদিও জি-২০তে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়ার জন্য হাসিনাকে সাধুবাদ জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে বলেছেন, ভারত হলো বাংলাদেশের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বৃহত্তম অংশীদার। ভারত থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধও তিনি মোদীকে করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৈঠকে কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা সহযোগিতা, শিক্ষা, কৃষি, সংস্কৃতি নিয়ে তিন দফা সমঝোতা স্মরক সই হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সফরে ভারতের সঙ্গে যেই সমঝোতা স্মারকগুলো সই হয়েছে তার ভেতর রয়েছে সাংস্কৃতিক বিনিময় চুক্তি, যা ২০২৩ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হবে। সেই সঙ্গে ভারতের এনপিসিআই ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে নেটওয়ার্ক-টু-নেটওয়ার্ক সংযোগের মাধ্যমে রুপি ও টাকা পারস্পরিক লেনদেন সহজ করার সমঝোতা হবে। আরেকটি সমঝোতা হয়েছে ‘কৃষি গবেষণায় সহযোগিতা’ নিয়ে।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলায় টুইট করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। গত ৯ বছরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অগ্রগতি খুবই সন্তোষজনক। গত ৯ বছরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অগ্রগতি খুবই আনন্দদায়ক। আমাদের আলোচনায় এসেছে- কানেক্টিভিটি, বাণিজ্যিক সংযোগের মতো আরও অনেক ক্ষেত্রগুলো।
এর আগে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে শুক্রবার নয়াদিল্লিতে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান ভারতের কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী শ্রীমতি দর্শনা জারদোশ।
নয়াদিল্লিতে পৌঁছানোর কয়েক ঘণ্টা পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শুরু করেন। নয়াদিল্লির ৭ নম্বর লোককল্যাণ মার্গে নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হয়ে ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক চলে। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন প্রমুখ অংশ নেন।