নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার ভোক্তাদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে বাউ মুরগি। এই জাতের মুরগি সাধারণত দেশী মুরগির বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করেন ভোক্তারা। ব্রয়লার মুরগি বেশি নরম হওয়ায় এটি অনেকেই পছন্দ করেন না। তাই বেশিরভাগ ক্রেতা বাউ মুরগির দিকে ঝুঁকছেন। যার ফলে সোনারগাঁও উপজেলার খামারিরা সাধারণ ক্রেতাদের পছন্দ ও চাহিদা উপর ভিত্তি করে বাউ মুরগি পালনে ঝুকে পড়েছেন। এই জাতের মুরগির উৎপাদনের পাশাপাশি বাজারে ভাল দাম ও চাহিদা থাকায় খুশি প্রান্তিক খামারিরা।
জানা যায়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পোলট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ আলী এবং অধ্যাপক ড. মো. বজলুর রহমান মোল্লা দীর্ঘদিন গবেষণা করে বাউ মুরগি উদ্ভাবন করেন। এই জাতের মুরগি মাত্র ৪০-৪২ দিনে এই মুরগির ওজন ১ কেজি ছাড়িয়ে যায়। যারফলে উপজেলার প্রান্তিক খামারি পর্যায়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে জাতটি। এছাড়াও এই জাতের মুরগির মাংসের কালার এবং স্বাদ প্রায় দেশী মুরগির মতই। ফলে ক্রেতাদের মাঝেও ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।
বর্তমানে এই জাতের মুরগি প্রায় সারাদেশেই লালন-পালন করা হচ্ছে। সারাদেশের মত সোনারগাঁও উপজেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই মুরগি। উপজেলার বেশিরভাগ এলাকাতেই বাউ মুরগি উৎপাদন করছেন খামারিরা।
উপজেলার সোনারগাঁও পৌরসভা এলাকার হামসাদী গ্রামের বাউ মুরগির খামারি ফরিদ হোসেন জানান, ২০০টি মুরগি দিয়ে শুরু করেছিলাম। মাত্র ৪৫ দিনেই গড় ওজন প্রায় ১ কেজি ৩০০ গ্রাম হয়েছে। খামার থেকেই বিক্রি করেছি। এতে ভাল মুনাফা পেয়েছি। বর্তমানে ৮০০ টি মুরগি লালন-পালন করছেন তিনি।
সাদিপুর ইউনিয়নের আরেক খামারী জুয়েল মিয়া জানান, বাউ মুরগি পালনে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। রোগ-বালাই নেই বললেই চলে। এই মুরগি পালনে সুবিধা হলো দেশি মুরগির তুলনায় অল্প দিনে বাজারজাত করা যায় এবং অন্য মুরগির তুলনায় ওজন ভালো আসে।
সোনারগাঁও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এস এম আউয়াল হক বলেন, বাউ মুরগির স্বাদ অনেকটা দেশি মুরগির মতো। উপজেলায় অনেকগুলো খামার পরিদর্শন করেছি। এ মুরগিতে রোগ-বালাই খুবই কম হয়ে থাকে। নতুন নতুন খামারিদের প্রাণিসম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।