রুশ সেনাবাহিনীর সমালোচকদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করবে রাশিয়া। এ লক্ষ্যে রাশিয়ার আইনপ্রণেতারা একটি বিলেরও অনুমোদন দিয়েছেন। এই বিলের অধীনে রাশিয়ান সেনাবাহিনীর সমালোচনাকারী যে কারও সম্পত্তি, অর্থ এবং মূল্যবান জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করতে পারবে রাশিয়া।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ সেনাবাহিনীর সমালোচনা করার জন্য দোষী সাব্যস্ত যে কারও সম্পত্তি, অর্থ এবং মূল্যবান জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করার একটি বিল অনুমোদন করেছেন রাশিয়ান আইনপ্রণেতারা।
আল জাজিরা বলছে, রুশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ স্টেট ডুমা বুধবার তিনটি প্রয়োজনীয় রিডিংয়ের প্রথমটিতে ৩৯৫ ভোট দিয়ে বিলটি পাস করেছে। আর এই বিলের বিপক্ষে ভোট পড়েছে তিনটি।
পার্লামেন্টের স্পিকার ব্যাচেস্লাভ ভোলোদিন এই বিলটির সহ-লেখক। তিনি আইন প্রণেতাদের বলেন, সেনাবাহিনীর সমালোচকদের থামাতে এই ব্যবস্থাও ‘যথেষ্ট নয়’। তিনি বলেন, ‘তারা আরামে বাস করে, সম্পত্তি ভাড়া দেয়, রাশিয়ান নাগরিকদের খরচে রয়্যালটি পেতে থাকে। তারা নাৎসি শাসনকে সমর্থন করার জন্য এই তহবিলগুলো ব্যবহার করে।’
তার দাবি, ‘গৃহীত সিদ্ধান্তটি আমাদের দেশের নিরাপত্তার বিরুদ্ধে অপরাধ যারা করে, যারা আমাদের নাগরিক, সৈন্য এবং অফিসারদের অপমান করা সম্ভব বলে মনে করে এবং যারা নাৎসিদের সমর্থন করে তাদের থামিয়ে দেবে।’
ইউক্রেনে আক্রমণের পর থেকে রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ ভিন্নমতের মানুষের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন বাড়িয়েছে এবং সেনাবাহিনীর সমালোচকদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার এই বিল পাস করাটা আসলে সেই ক্র্যাকডাউনের সর্বসাম্প্রতিক উদাহরণ।
এছাড়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণ-মাত্রায় আক্রমণ শুরুর পর থেকে মস্কো কর্তৃপক্ষ তার সামরিক অভিযানের যে কোনও সমালোচনা নিষিদ্ধ করেছে এবং যুদ্ধের বিরোধিতাকারী হাজার হাজার রাশিয়ানকে আটক করেছে।
আল জাজিরা বলছে, রুশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে ‘মিথ্যা তথ্য’ ছড়ানোর বর্তমান অভিযোগে ১৫ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। আর ইউক্রেনের যুদ্ধ সম্পর্কে যেসব তথ্য সরকারি উৎস থেকে আসে না সেগুলোকে ‘মিথ্যা’ বলে গণ্য করা যেতে পারে।
আইনের কারণে বেশ কিছু লেখক ও কর্মী দীর্ঘ সাজা পেয়েছেন এবং কয়েকজনকে ‘চরমপন্থী ও সন্ত্রাসী’ তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। তবে সর্বশেষ পদক্ষেপের লক্ষ্য তাদের আরও শাস্তি দেওয়া যারা সেনাবাহিনী সম্পর্কে সমালোচনা করে এবং দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া রাশিয়ানদের প্রভাবিত করতে পারে।
রাশিয়ান কর্মকর্তারা অবশ্য গত কয়েক মাস ধরে ইউক্রেনের পরিস্থিতি সম্পর্কে সমালোচনামূলক কথা বলার জন্য সমালোচনাকারীদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসাবে নিন্দা করার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন।
রাশিয়ার ডানপন্থি লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অব রাশিয়ার ডেপুটি আন্দ্রে লুগোভয় বলেছেন, ‘আমাদের সদিচ্ছা এটাই দেখাচ্ছে যে, আমরা এটি মাত্র দুই বছরের মধ্যে করতে পেরেছি।’
এদিকে ইউক্রেনে ‘ভাড়াটে সেনা’ রাখার জন্য ফ্রান্সের নিন্দা করে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রুশ আইনপ্রণেতারা। দুই দেশের মধ্যে কয়েকদিনের উত্তেজনার পর এই সিদ্ধান্ত নেন তারা।
এর আগে গত সপ্তাহে মস্কো প্যারিসের ‘ইউক্রেন সংঘাতে ক্রমবর্ধমান সম্পৃক্ততার’ বিষয়ে ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছিল।
তবে ফ্রান্স এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং বলেছে, যুদ্ধে বা ‘অন্য কোথাও’ তাদের কোনও ভাড়াটে সেনা নেই এবং এই ধরনের দাবি কার্যত বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার অংশ।
উপদেষ্টা সম্পাদক: এএসএম মাঈন উদ্দিন পিন্টু
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ তাওহীদুল হক চৌধুরী
ফোন: ০১৭৯১-২৬৭৭২৪, বার্তা বিভাগ: ০১৮৪৮-৩৩০৬৭৮
ই-মেইল : mail.muktokolom24@gmail.com
Copyright © 2024 মুক্ত কলম নিউজ. All rights reserved.