২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশের খবর সংগ্রহে গিয়ে নির্যাতিত হওয়া সাংবাদিকদের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তাদের পাশে আমি সবসময় আছি। সাধ্যমতো সহযোগিতা করব, এ টুকু আশ্বাস দিতে পারি। এদের চিকিৎসা হোক, এরা ভালো হয়ে উঠুক, সেটাই আমরা চাই।
আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব জার্নালিস্টসের (বিএফইউজে) প্রতিনিধি সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের ওপর হামলা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কিছু কিছু আছে, সামান্য কিছু হলে তারা বড় বড় বিবৃতি দেয়। তারা কোথায় এখন? তাদের এখন আমরা দেখি না, তাদের কোনো কথা শুনি না, হঠাৎ করে তারা কোথায় চলে গেল? এই যে ৩০ জন সাংবাদিক আহত, তাদের কাছ থেকে তো কোনো কথা শুনি না। আর বাংলাদেশের সুশীল বাবুরা কোথায়? সুশীল বাবুদের কাজ কী? আওয়ামী লীগের কিছু হলে, আওয়ামী লীগের দোষ খুঁজে বেড়ানো? মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের কোনো অপরাধ নেই। আমাদের সুশীল বাবুরা এখন চুপচাপ। তাদের কাছ থেকে এখন কোনো বিবৃতিও দেখি না, কিছুই দেখি না। এখন কেন মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার হয় না? তারা কেন এখন চুপ হয়ে আছে?
বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বিএফইউজে মহাসচিব দীপ আজাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন।
বিএনপির আমলে প্রেসক্লাবে পুলিশ ঢুকিয়ে দিয়ে সাংবাদিকদের পেটানো হয়েছিল উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এদের চরিত্র। সাংবাদিকদের ওপর যেভাবে আক্রমণ করেছে, পুলিশের উপর যেভাবে আক্রমণ করেছে, আমি তীব্র নিন্দা জানাই। কোনো কোনো পত্রিকাও আমাদের উপর দোষারোপের চেষ্টা করে, তাদের ধিক্কার জানাই। প্রকাশ্য দিবালোকের ঘটনা আর এখন হলো ডিজিটাল যুগ, সবকিছু ধারণ করা যায়, চেহারা পর্যন্ত দেখা যায়। দক্ষিণ যুবদলের এক নেতা…প্রেস লেখা…সে আগুন দিচ্ছে… পেটাচ্ছে…পুলিশ মারছে। এত কিছু করেও তারা ভাবছে রেহাই পেয়ে যাবে। এর শাস্তি তাদের পেতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, হাসপাতালে ঢুকে অত্যাচার করা, মানুষের ওপর আক্রমণ, অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে দেওয়া, এত অমানবিক আচরণ একটা রাজনৈতিক দলের হয় না। ইসরায়েল যেভাবে ফিলিস্তিনে বোম্বিং করে নারী-শিশু হত্যা করছে, এরা ঠিক সেভাবে আমাদের হাসপাতালের ওপর আক্রমণ করেছে। জানিনা শিক্ষাটা ইহুদিদের কাছ থেকে পেয়ে আসছে কি না। সেটাও আমাদের জানা দরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, আন্দোলন আমরাও করেছি, কিন্তু বাংলাদেশে আন্দোলন নামের যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করা হয় তা অত্যন্ত দুঃখজনক। ২৮ অক্টোবর সমাবেশ করতে চেয়েছে বিএনপিসহ আরও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দল। আমরা বাধা দিইনি। তারা কথা দিয়েছিল শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবে, কিন্তু দেখা গেল শান্তিপূর্ণ না। তারা সেখানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। সেদিন আমাদের কেউ ছিল না, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নির্দেশ ছিল দূরত্বে থাকার, যাতে কোনো মতে কিছু না হয়। সেখানে যেভাবে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে, অত্যাচার চালানো হয়েছে! এটা কেন করা হলো সে প্রশ্নের উত্তর বিএনপিকে দিতে হবে। তারপর পুলিশের ওপর অত্যাচার। এর আগেও আমরা দেখেছি, পুলিশকে শুধু পিটানো না, মাটিতে পড়ে বেহুঁশ হয়ে গেছে… তারপরও মারা হচ্ছে। সমাবেশ করতে এসে এত ইট-পাথর কোথায় পেল তারা? তাদের উদ্দেশ্য ছিল খুবই খারাপ। আগুন, অগ্নিসন্ত্রাস, জ্বালাওপোড়াও, এটাই এদের চরিত্র।
এসময় প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে আরও ১০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন।