টেলিভিশনে ক্রাইম পেট্রোল ও সিনেমার কাহিনী দেখে নিখোঁজ হওয়া শিপন চন্দ্র বর্মন (২৮) নামে এক যুবকের সন্ধান দেওয়ার কথা বলে নগদ দুই লাখ টাকা দাবি করে তিন শিশু। তবে তারা দুষ্টামি করে এ টাকা দাবি করে বলে সোমবার রাত ৮টায় ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্তি পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়।
নিখোঁজ হওয়া শিপন চন্দ্র বর্মন চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার বজেন্দ্র চন্দ্র বর্মণ ছেলে। শিপন গত ১৬ অক্টোবর দুপুর ২টার দিকে চাঁদপুর শহরের ষোলঘর বিটি রোড এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়।
এ ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে পরের দিন ১৭ অক্টোরব চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে চাঁদপুর শহরের বিভিন্নস্থানে নিখোঁজ ব্যক্তির পরিচয়, ছবি এবং যোগাযোগের নম্বরসহ সন্ধান চাই পোস্টার লাগান শিপনের পরিবারের সদস্যরা। ওই তিন শিশু চাঁদপুর শহরের জাফরাবাদ এলাকার ছেলে। তাদের বয়স ৮-৯ বছর।
অতিরিক্তি পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় জানান, নিখোঁজ শিপনের সন্ধান চাই পোস্টারে ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে গত ২১ অক্টোবর তার পরিবারের কাছে অপরিচিত একটি মোবাইল নম্বর থেকে কল দিয়ে শিপনের সন্ধান দেওয়ার কথা বলে নগদ দুই লাখ টাকা দাবি করেন। নিখোঁজ শিপনের পরিবার পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন। এরই প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের নির্দেশক্রমে নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধান ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চাঁদপুর জেলা ডিবি পুলিশ অনুসন্ধানের নির্দেশ প্রদান করেন।
তিনি আরও জানান, ডিবি পুলিশ ওই মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত তিন শিশুকে সনাক্ত করে ডিবি অফিসে নিয়ে আসেন। শিশুরা চাঁদপুর শহরের জাফরাবাদ এলাকার ছেলে। তারা গত ২১ অক্টোবর বিকেলে খেলাধুলা করতে মাঠে আসার সময় এক শিশু তার দাদির ব্যবহৃত মোবাইল ফোন মাঠে নিয়ে আসে। তখন শিশুরা মাঠের পাশে নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধান চাই-পোস্টারের মোবাইল নম্বর দেখতে পেয়ে কল দিয়ে নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধান দেওয়ার কথা বলে নগদ দুই লাখ টাকা দাবি করে। তারা টেলিভিশনে ক্রাইম পেট্রোল ও সিনেমা দেখার কাহিনী দেখে দুষ্টামি করে টাকা দাবি করে। সংশোধনের জন্য প্রাথমিকভাবে তাদেরকে মা-বাবার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, অভিভাবকরা শিশু ও স্কুল শিক্ষার্থীদের মুঠোফোনে (মোবাইল ফোন) ইন্টারনেট ব্যবহার থেকে বিরত রাখতে হবে। শিশুদের মুঠোফোনে (মোবাইল) ইন্টারনেট ব্যবহার ও গেমস এর বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে তাদের আচরণ পরিবর্তন হয়। এতে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে শিশুরা মোবাইল ফোনের ও টিভির বিষয়বস্তু অবিকল নকল করে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়তে পারে। অভিভাবকদের শিশুদের একাকিত্ব দূর করার জন্য বই পড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। নিজেদের ব্যস্ততার কারণে সন্তানরা যাতে মোবাইলে আশক্তি ও টিভিতে ক্রাইম সিরিয়াল দেখে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে না পড়ে সেই বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে।