সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহার এবং আগের পেনশন স্কিম চালু রাখার দাবি মেনে না নিলে আন্দোলনের মাধ্যমে সারাদেশ অচল করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নেতারা।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) বেলা ১১টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে মল চত্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, কর্মচারী সমিতি, কারিগরি কর্মচারী সমিতি ও চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ’-এর যৌথভাবে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তারা এই ঘোষণা দেন।
এর আগে সকাল থেকেই তারা কর্মবিরতি শুরু করেন। কর্মবিরতির অংশ হিসেবে আজ সারাদিন জরুরি কাজ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের দাপ্তরিক কাজ বন্ধ রাখেন তারা।
এসময় তারা ‘দুনিয়ার মজদুর, এক হও এক হও’; ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’; ‘বৈষম্যের প্রজ্ঞাপন বাতিল করো, করতে হবে’; ‘সর্বজনীন পেনশন, মানি না মানবো না’; ‘শেখ হাসিনার বাংলায়, প্রত্যয়ের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
কর্মচারীরা বলেন, সচিবরা আমাদের ওপর তাদের তৈরি করা অন্যায় নীতি চাপিয়ে দিয়েছে। তারা আমাদের বুকের ওপর দিয়ে গাড়িতে করে অফিসে যায়। আমাদের দাবি মেনে না নিলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব রাস্তা বন্ধ করে দিলে তারাও আর আমাদের বুকের ওপর দিয়ে অফিসে যেতে পারবে না। আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করে দেবো। সারা দেশের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্বাত্মক আন্দোলনের মাধ্যমে সারাদেশ অচল হয়ে যাবে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তারা বলেন, আপনাদের হয়তো সাময়িক সমস্যা হচ্ছে কিন্তু এই আন্দোলন আপনাদের জন্যও। আপনারাও একসময় শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী হিসেবে যোগ দেবেন। আপনাদের ভবিষ্যতের সুবিধার জন্য আমরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি।
ঢাবির কর্মচারী সমিতির সভাপতি সারোয়ার মোর্শেদ বলেন, আমরা এই আন্দোলন শেষ না করে আমরা ঘরে ফিরবো না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে এমন রাজনীতি আমরা কখনো মেনে নেবো না। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রী আপনি সর্বজনীন সুযোগ সুবিধা স্কিম নামে এমন একটি স্কিম তৈরি করুন, যার ফলে আমলাদের মত কর্মচারীরাও সমান সুযোগ পাবে। বর্তমান পেনশন স্কিমে আমলা, সচিবরা সব সুযোগ পাবে কিন্তু আমাদের বেলায় এসে সেই পেনশনকে কাটছাঁট করা হয়েছে; যা আমরা কখনো মেনে নেবো না।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী, আপনাকে কে বা কারা এমন ভুলভাল বুঝিয়েছে আমরা জানি না। যে-ই বঙ্গবন্ধু আমাদের জন্য আন্দোলন করে ছাত্রত্ব হারিয়েছিলেন তাদের এই অন্যায় স্কিম মেনে নেওয়ার মতো নয়। এই প্রত্যয় স্কিম যদি বাতিল না করা হয় তাহলে আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে ঢাবিকে অচল করে দেবো, পুরো বাংলাদেশ অচল করে দেবো।
বিক্ষোভ সমাবেশে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. শাহজাহান, কর্মচারী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল হক, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ইউনিয়নের তরিকুল ইসলাম, মনির রহমান, কর্মচারী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম, ইমদাদ হাসান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।