রাজবাড়ীতে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে গোয়েন্দ পুলিশ। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ।
আটককৃতরা হলেন- রাজবাড়ী সদর উপজেলার উত্তর ভবানিপুর গ্রামের তাহের মন্ডলের ছেলে মো. শফিকুল ইসলাম (৩৬) ও নওগাঁর পোরশা থানার মৃত আকিমুদ্দিনের ছেলে মো. আবু তাহের ওরফে ফয়সাল (৪২)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, মো. শামিম শেখ নামে এক যুবক কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষার জন্য আবেদন করেন। কয়েকদিন আগে আমরা খবর পাই ১৪ লাখ টাকার বিনিময়ে তাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে একটি প্রতারক চক্র প্রতারিত করার চেষ্টা করছে। প্রতারক চক্রের এক সদস্য প্রাথমিকভাবে ৭ লাখ টাকা দিতে বলে। এই টাকাটা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রেখে তাদের চেক দিতে হবে। চাকরি প্রার্থী ছেলেটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা রেখে প্রতারক চক্রকে চেক দেন। পরে ওই চাকরী প্রার্থী যখন বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার স্বীকার হচ্ছেন তখন তিনি পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন। পরে আমরা অভিযান চালিয়ে গত শুক্রবার রাজবাড়ী থেকে শফিকুল নামের একজনকে আটক করি। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা থেকে এই চক্রের আরও এক সদস্য আবু তাহের ফয়সালকে আটক করা হয়। তারা দুইজন একসাথে এই প্রতারণার ফাঁদটি পাতেন।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫৩টি সিভি, ১৩টি ভুয়া নিয়োগপত্র, পাঁচটি আইডি কার্ড, সাত পাতা ব্যাংকের চেক, ৯টি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, পাঁচটি চেক বই, তিনটি এটিএম কার্ড, নিয়োগের বিজ্ঞাপন, হিসেব লেখা ডায়েরিসহ বিভিন্ন প্রকার মালামাল জব্দ করা হয়।
পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, কিছুদিন পরেই পুলিশের কনস্টেবল পদে বড় একটি নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। যে কারণে অনেক প্রতারক চক্র সক্রিয় হয়েছে। আমরা অভিযান চালিয়ে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া দুই প্রতারক চক্রের সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছি। এই চক্রটি বিভিন্ন এলাকার চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৩০ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলার করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে তিনি সকলকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মুকিত সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইফতেখারুজ্জামান, ডিআইও-১ বিপ্লব দত্ত চৌধুরী, গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান খানসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।