ঢাকা | সোমবার | ২৫ নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১:০৮ পূর্বাহ্ণ
জাতীয়সংলাপে আপত্তি নেই সরকারের

সংলাপে আপত্তি নেই সরকারের

spot_img

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে আপত্তি নেই সরকারের। তবে কার সঙ্গে সংলাপ হবে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। একইসঙ্গে মন্ত্রী জানান, বন্ধু দেশ কোনো পরামর্শ দিলে তা মূল্যায়ন করে সরকার।

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শর্তহীন সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাওয়া হয় মোমেনের কাছে।

জবাবে তিনি বলেন, আমাদের সংলাপে আপত্তি নেই। আমরা গণতন্ত্র ধ্বংস করতে চাই না। গণতন্ত্র সমুন্নত করতে যা যা করা দরকার আমরা তাই করব। সেখানে যদি সংলাপের প্রয়োজন হয় আমরা সেটা করব। কিন্তু কার সঙ্গে করব, সেটা বিবেচনার বিষয় আছে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে।

সংলাপ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন— ট্রাম্প সাহেব আর বাইডেন সাহেব যদি সংলাপ করেন তাহলে আমিও রাজি।

বন্ধু দেশগুলো কোনো ভালো পরামর্শ দিলে সরকার সেটাকে আমলে নেয় জানিয়ে মোমেন বলেন, যার যার মতামত রয়েছে, তারা দিচ্ছেন। আমরা এটা মাইন্ড করছি না। আমাদের বন্ধু দেশ যদি আমাদের কোনো পরামর্শ দেয় আমরা ওটাকে খুব ভালোভাবে নিই, সেটাকে মূল্যায়ন করি। দেশের মঙ্গলের জন্য আমরা সেটাকে গ্রহণ করি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ রকম পরামর্শ বহু আসে। আসুক, আমরা দেখি পরামর্শ যেগুলো আসে সেগুলো প্রয়োগ করা যায় কি না। বাস্তবতা দেখতে হবে। ডিএসএথর (ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন) ক্ষেত্রে বিদেশিরা বলেছে, আমরা ওটা গ্রহণ করেছি। আমরা খুব বাস্তবসম্মত দেশ, খুব বাস্তববাদী সরকার। মানুষের কোনো সত্যিকারের অভিযোগ থাকলে সেটা আমরা গ্রহণের চেষ্টা করি।

তিনি বলেন, অন্যান্য দেশ যদি কোনো পরামর্শ দেয় আর সেগুলো যদি উন্নতমানের হয় আমরা তা গ্রহণ করি। খালি বললে তো হবে না। একজন বলল, শ্রমিকদের মজুরি ২৫ হাজার করতে। এটা করতে গেলে ওই মালিক ফ্যাক্টরি চালাতে পারবে কি না বা লাভ করতে পারবে কি না, সেটাও তো দেখতে হবে।

দেশের তিন রাজনৈতিক দলকে চিঠি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সমঝোতার উদ্যোগ নিল কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, ওদের জিজ্ঞেস করেন। তারা কি কারণে করেছে তাদের জিজ্ঞেস করেন। তারা ভালো উত্তর দিতে পারবেন। আওয়ামী লীগ দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সৃষ্টি করেছে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে চাই।

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যেন কোথাও বিঘ্নিত না হয়, সেটা যেন না হয়। আগেও বিএনপি সরকার এবং তাদের উত্তরসূরিরা মানুষের ভোট দেওয়ার অধিকার নষ্ট করেছে।

সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ভলকার টুর্কের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওনাকে বলেন ওনার দেশে বন্দিকে, অপরাধীকে, দণ্ডিত অপরাধীকে অন্য দেশে পাঠায় কি না?

গতকাল (সোমবার) মন্ত্রণালয়ে সাংবা‌দিক‌দের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ব‌লে‌ছেন, নির্বাচনের বিষয়টি বাংলাদেশের জনগণের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সংবিধানের আলোকে যে আইন প্রণয়ন হয়েছে, সে অনুযায়ী নির্বাচন হবে।

নির্বাচ‌নের আগে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের অনুরোধ করে চিঠি বিলি করছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। আওয়ামী লীগ বৈঠকের বিষ‌য়ে চি‌ঠি পে‌য়ে‌ছে কি না জান‌তে চাইলে শাহরিয়ার আলম ব‌লেন, এটা দ‌লের মুখপাত্র বল‌তে পার‌বেন।

বি‌দে‌শি কূটনীতিকদের অভ্যন্তরীণ বিষ‌য়ে হস্তক্ষেপ নি‌য়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী ব‌লেন, সবসময় বলি- অপছন্দ করলেও কিছু জিনিস আমাদের করতে হয়। আর নির্বাচনের বিষয়টি বাংলাদেশের জনগণের অভ্যন্তরীণ।

এদিকে সোমবার রাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র লেখা চিঠি হাতে পেয়েছি।

এর আগে সোমবার বিকেলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করেছে জাতীয় পার্টি। দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের নেতৃত্বে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সাংবাদিকদের বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত মূলত তাদের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লু লিখিত একটা চিঠি নিয়ে এসেছেন। তিনি চিঠিটা আমাদের পার্টির চেয়ারম্যানকে হস্তান্তর করেছেন।

চুন্নু বলেন, পিটার হাস জানিয়েছেন— একই চিঠি বাংলাদেশের ৩টি দলকে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি এই তিনটি দলকে একই চিঠি দেওয়া হয়েছে।

spot_img

সম্পর্কিত আরো খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ খবর