তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে যশোর। শনিবার (২০ এপ্রিল) জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটিতে অবস্থিত আবহাওয়া অফিস বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এদিন বাতাসের আর্দ্রতা ২৫ শতাংশ ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এদিকে তীব্র গরমে নাজেহাল হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের জনজীবন। ঘরে-বাইরে কোথাও যেন স্বস্তি মিলছে না। দাবদাহে জনশূন্য হয়ে পড়েছে যশোর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। যে সকল সড়কগুলোতে শুক্রবার ব্যতীত অন্যান্য দিন মানুষের সমাগম এবং যানজট থাকে, সেসব সড়কে মানুষ ও যানবাহন কোনটিরই উপস্থিতি নেই।
শনিবার সকাল থেকে যশোর শহরের বড়বাজার সংলগ্ন দড়াটানা মোড়, বকুলতলা, গরিব শাহ সড়ক, জেল রোডসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে মানুষের উপস্থিতি একেবারেই কম। দুই-একটি ইজিবাইক ও রিকশা থাকলেও যাত্রীর অপেক্ষায় বসে আছেন চালকরা। চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের শ্রমজীবীরা।
শহরের সিভিল কোর্ট মোড়ে ইজিবাইক রেখে যাত্রীর অপেক্ষায় বসে ছিলেন ইজিবাইক চালক লুৎফর রহমান। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল ৭টার দিকে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। ৯টা পর্যন্ত মোটামুটি ভাড়া টেনেছি, তারপর থেকে আর ভাড়া হয় না। রাস্তায় লোকজনই নেই, যাত্রী পাব কীভাবে?
শহরের জিরো পয়েন্টে রাস্তার ওপর রিকশা রেখে জর্জ কোর্টের প্রাচীরের গায়ে হেলান দিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন রিকশাচালক জমির হোসেন। তিনি বলেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহর পুরো ফাঁকা হয়ে গেছে। এতো গরমে মানুষ বের হবে কী করে?, আমরা পেটের দায়ে বের হয়ে যাত্রী পাচ্ছি না। ভাড়ার রিকশা চালাই, মহাজনকে দেওয়ার মতো টাকাও এখনো হয়নি। নিজের আয় তো দূরের কথা।
শহরের বড় বাজারের কাঁচাবাজারেও ক্রেতাদের উপস্থিতি অনেক কম দেখা গেছে। মোল্লাপাড়ার বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম বলেন, বাজার করতে হবে এজন্য বের হয়েছি। অন্যথায় এই গরমে বাড়ি থেকে বের হতাম না। রোদে শরীর যেন পুড়ে যাচ্ছে।
শহরের দড়াটানা হাসপাতাল মোড়ে পথচারী রনি হোসেন বলেন, বাসায় অসুস্থ রোগী আছে, তার জন্য ওষুধ কিনতে বের হয়েছি। রাস্তায় মোটরসাইকেল রেখে দুই মিনিটের জন্য ফার্মেসিতে এসেছি। এখন মোটরসাইকেলের ওপর বসা যাচ্ছে না। রোদে আগুন হয়ে গেছে।
এর আগে গতকাল শুক্রবার যশোরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।