মিয়ানমারে সামরিক জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘর্ষের জেরে দেশটি থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসাদের দুয়েকদিনের মধ্যে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে হাইওয়ে পুলিশের ‘সেবা সপ্তাহ-২০২৪’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এ তথ্য জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের চতুর্দিকেই যুদ্ধ লেগে আছে। বাংলাদেশ সীমানায় আরাকার আর্মির সঙ্গে তাদের বাহিনীর যুদ্ধ চলছে। আমরা দেখছি তাদের এই যুদ্ধ এতোটাই তীব্র হয়েছে যে, মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি), সরকারি কর্মকর্তা… ধারণা করছি দুই-একজন সেনা সদস্য আমাদের এখানে ঢুকে পড়েছে। এদের মধ্যে কেউ অস্ত্র নিয়ে এসেছে, কেউ অস্ত্র ছাড়া ঢুকেছে। তারা এসেছে জীবন রক্ষার জন্য, যুদ্ধের জন্য ঢোকেনি।
তিনি বলেন, আমাদের বিজিবি সদস্যরা তাদের অস্ত্রগুলো রেখে আটক অবস্থায় আমাদের এখানে রেখেছে। এদের মধ্যে যারা আহত, তাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমরা তাদের ফেরত নেওয়ার কথা জানিয়েছি। তারা (মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ) অতি শিগগিরই জাহাজযোগে তাদের নিয়ে যাবে বলে বার্তা পাঠিয়েছে। আশা করছি ২-১ দিনের মধ্যেই তাদের সদস্যদের তারা ফেরত নিয়ে যাবে। আমাদের সঙ্গে তাদের কোনো কনফ্লিক্ট নেই, কোনোরকম যুদ্ধ নেই, তারা আত্মরক্ষার্থে এখানে এসেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি, এমনিতেই ১২ লাখ রোহিঙ্গা আমাদের এখানে রয়েছে। রোহিঙ্গা বা অন্য কেউ যেই আসুক, মিয়ানমার থেকে আমরা কাউকে আর এখানে সেটেল হতে দেব না। যারা আত্মরক্ষার্থে এখানে আসছে তাদের সরকারকে বলেছি নিয়ে যেতে। তারা নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের বিজিবি, পুলিশ, কোস্টগার্ড সবাই অতন্দ্রপ্রহরীর মতো কাজ করছে। সেখানে যুদ্ধ হচ্ছে, এ সীমানায় তাদের কেউ আসবে বলে মনে হচ্ছে না। তারপরেও যদি আসে, আমাদের এখানে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।
বিজিপি সদস্যদের যারা আশ্রয় নিয়েছে, রোহিঙ্গাদের ওপর আক্রমণে তাদের কেউ জড়িত ছিল কি-না, জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো লিস্ট নেই। তবে আমরা সে সময় দেখেছি মাইলের পর মাইল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, নদীতে লাশ ভেসে আসতে দেখেছি।
তিনি বলেন, সেখানে যে গণহত্যা চালাতে আমরা দেখেছি, সে সময় তাদের আর্মি দাঁড়ানো ছিল। তারাই গণহত্যা করেছে কি না জানি না। আন্তর্জাতিক আদালতে এটার বিচার চলছে।