রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই বাংলাদেশ ও ভারতের মাঝে অনেকটা উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর মধ্যে ক্রিকেট মাঠে ভারতের বিপক্ষে যে কোনো ম্যাচই বাংলাদেশের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের রোমাঞ্চকর ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটিতে ভারতকে হারিয়ে আবারও অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট অক্ষুণ্ণ রাখল বাংলাদেশ দল।
গত বছর ফাইনালে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ১৯৫ রানে হারিয়ে প্রথমবার অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জেতা বাংলাদেশের যুবারা আজও ভারতকে উড়িয়ে দিয়ে টানা দ্বিতীয়বার এশীয় শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট মাথায় তুলল। রোববার (৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের যুবারা দাপুটে পারফরম্যান্সে ৫৯ রানে জয় তুলে নিয়েছে।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪৯.১ ওভারে মাত্র ১৯৮ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। তবে ভারতের মতো শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের বিপক্ষে এই স্কোরই যথেষ্ট প্রমাণ করে বাংলাদেশের দুর্দান্ত বোলিং। ৩৫.২ ওভারে ভারতীয় দল অলআউট হয় মাত্র ১৩৯ রানে। ফাইনালে ভারতের হয়ে জয়ের স্বাদ না পাওয়ার এমন ঘটনা যুব এশিয়া কাপে এই প্রথম।
বাংলাদেশের পেস আক্রমণ আজ যেন ছিল অপ্রতিরোধ্য। দ্বিতীয় ওভারে আয়ুশ মাত্রেকে বোল্ড করে ভারতীয় শিবিরে প্রথম ধাক্কা দেন আল ফাহাদ। পঞ্চম ওভারে ১৩ বছর বয়সী বিস্ময়-বালক বৈভব সূর্যবংশীকে ৯ রানে আউট করেন বাঁহাতি পেসার মারুফ মৃধা। সেমিফাইনালে দুর্দান্ত ব্যাট করা সূর্যবংশী আজ বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি।
পেসার রিজান হাসানও অসাধারণ পারফর্ম করেন, ফিরিয়ে দেন আন্দ্রে সিদ্ধার্থকে। ভারতীয় দলের অধিনায়ক মোহাম্মদ আমান ও কেপি কার্তিকেয়া কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও, পেসার ইকবাল হোসেন ইমনের জোড়া আঘাতে তাদের সেই চেষ্টায় ভাটা পড়ে। ইমন ২১তম ওভারে দুই বলে কার্তিকেয়া (২১) এবং নিখিল কুমারকে (০) ফিরিয়ে দেন। এরপর আল ফাহাদ ও ইমন মিলে ভারতের ব্যাটিং লাইনআপে একের পর এক আঘাত হানেন।
ভারতের অধিনায়ক মোহাম্মদ আমান শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে ৩২তম ওভারে বাংলাদেশ অধিনায়ক আজিজুল হাকিমের অফ স্পিনে বোল্ড হয়ে ফিরে গেলে ভারতের পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ৩৫.২ ওভারে ১৩৯ রানে গুটিয়ে যায় ভারত। বাংলাদেশের পেস ও স্পিনের সমন্বয়ে দুর্দান্ত এই জয়ে আরও একবার প্রমাণ হলো, যুব ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখন এশিয়ার সেরা।
টানা দ্বিতীয়বার এশিয়া কাপ জয়ের আনন্দে ভাসছে বাংলাদেশের যুব ক্রিকেট দল। সবার চোখে-মুখে ছিল গর্বের হাসি। এই জয়ের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতের ক্রিকেট তারকাদের আরও একবার তাদের সামর্থ্যের জানান দিল বাংলাদেশ। এই জয় শুধু একটি শিরোপার নয়, বরং ভবিষ্যতের ক্রিকেটে বাংলাদেশকে শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি। দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত। যুবারা দেখিয়ে দিয়েছে, সঠিক দিকনির্দেশনা ও পরিকল্পনায় তারা আরও অনেক দূর যেতে প্রস্তুত।