বৈদেশিক ঋণে দেশে যেসব উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে সেগুলো দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে বৈদেশিক ঋণের প্রকল্পে তিন মাস অন্তর অন্তর পর্যালোচনা ও উন্নয়ন প্রকল্পে মানসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান দিয়ে সমীক্ষা করার নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব নির্দেশনা দেন তিনি। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে ব্রিফিং করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালাম।
সভায় ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট (এডিপি) অনুমোদন করা হয়। এর মধ্যে সরকার দেবে ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আর বিদেশি ঋণ ও অনুদান থেকে আসবে এক লাখ কোটি টাকা।
সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালাম প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে বলেন, যেসব সরকারি কর্মকর্তা নানা সময়ে বিদেশে প্রশিক্ষণে যান, সেখান থেকে ফেরার পর তাদের প্রশিক্ষণের ধরন অনুযায়ী প্রকল্পে নিয়োগ দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া যাদের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে তাদের আলাদাভাবে প্রশিক্ষণ দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন বৈদেশিক ঋণের প্রকল্প দ্রুত শেষ করতে হবে। বৈদেশিক ঋণের প্রকল্পে তিন মাস অন্তর অন্তর পর্যালোচনা করার কথা বলেছেন। এ ছাড়া উন্নয়ন প্রকল্পে মানসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান দিয়ে সমীক্ষা করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব প্রকল্পে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান আছে সেগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ নজর দিতে হবে। এ ছাড়া প্রতি তিন মাস পরপর এসব প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে একনেকে প্রতিবেদন দিতে হবে।
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমরা যে বৈদেশিক ঋণ নিচ্ছি সেগুলো বিচার বিশ্লেষণ করেই নেয়া হয়। আগের মতো সুতা লাগানো (শর্ত দেয়া) ঋণ নেয়া হয় না। ঋণ দিয়ে এটা করতে হবে ওটা করতে হবে- এসব থাকলে আমরা সে ঋণ নেই না।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, আগামীতে উপজেলাভিত্তিক প্রকল্প থেকে সরে এসে জেলাভিত্তিক প্রকল্প প্রণয়নে গুরুত্ব দেয়ার বিষয়ে এনইসি সভায় আলোচনা করা হয়েছে। কারণ উপজেলা পর্যায়ে প্রকল্প নিলে সেগুলোর সমন্বয় থাকে না। এর ফলে উপজেলাগুলোতে সমউন্নয়ন হয় না। এজন্য এখন থেকে জেলাভিত্তিক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। বিশেষ করে গ্রামীণ অবকাঠামো, স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নকে গুরুত্ব দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন জানান, গত জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৪৯ দশমিক ২৬ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ হার ছিল ৫৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এনইসি বৈঠকে সব সচিবদের সামনে এ তথ্য তুলে ধরে এডিপি বাস্তবায়ন হার বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এনইসি সভায় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার ও পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকারসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।