সকালে পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিয়েছেন বাবা। একই দিনে দুপুরে বার্ষিক পরীক্ষা ছেলের। তাই বাধ্য হয়ে বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে সায়েম মিয়া (১১)।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটেছে। সায়েম মিয়া ২৫নং বানিয়াজুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে সায়েম মিয়ার বাবা আবজাল মিয়া মারা যান। দুপুরে বার্ষিক পরীক্ষা থাকায় বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় অংশ নিতে সাড়ে ১২টার দিকে স্কুলে আসে সায়েম।
সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সায়েম পরীক্ষার খাতায় লিখছে। এসময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে সে বলে, আমার আব্বা আর নেই! বাবা বলত, ভালো করে পড়ালেখা করে অনেক বড় হবে। তাই আমি পরীক্ষা দিতে এসেছি।
সায়েমের চাচা শাকিব হাসান বলেন, আবজাল মিয়া লিভারের টিউমার জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সে মুন্নু ফ্রেবিক্স লিমিটেড ইলেক্ট্রিশিয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চিকিৎসা করতে গিয়ে তার পরিবার একেবারে নিঃস্ব।
সায়েমের শ্রেণিশিক্ষক সামছুন নাহার বলেন, সায়েমের বাবার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আমরা মর্মাহত। তাকে মানবিক বিশেষ বিবেচনায় পরীক্ষা না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু সায়েম পরীক্ষা দিবেই। তাই, তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা ভেবে আজকের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সান্ত্বনা ও সাহস যুগিয়েছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ বাবুল মিয়া বলেন, বাবার লাশ বাড়িতে রেখে ছেলে পরীক্ষা দিতে এসেছে। বিষয়টি জানার পর আমরা ওই ছাত্রকে বুঝানোর পরও সে বলে, স্যার আমি সিক্সে উঠবো। তাই ফাইনাল পরীক্ষা দেব। পরীক্ষা শেষে ওই ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে শোকার্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছি। আমরা সায়েমের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।