ঘরের মাঠে তুলনামূলক দুর্বল স্কোয়াড নিয়ে আসা নিউজিল্যান্ডের কাছে প্রায় সিরিজ হারতে বসেছিল পাকিস্তান। সেখান থেকে দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাকিস্তানকে কক্ষপথে ফিরিয়েছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। তার আগে স্বাগতিকদের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ গড়ার পথে অধিনায়ক বাবর আজম দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ফলে নিউজিল্যান্ডের কাছে প্রায় হারতে বসা ম্যাচটিতে ৯ রানের জয়ে ২-২ সমতা নিয়ে সিরিজ শেষ করল পাকিস্তান।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে গতকাল (শনিবার) ছিল সিরিজের শেষ ম্যাচ। এর আগে প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছিল। দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক জয়ের পর, পরবর্তী দুই ম্যাচ জিতে বাবরদের সিরিজ জয়ের স্বপ্ন ভেস্তে দেয় সফরকারী কিউইরা। তাই পঞ্চম টি-টোয়েন্টি ছিল পাকিস্তানের জন্য সিরিজ খোয়ানো কিংবা সমতা টানার ম্যাচ। সে লক্ষ্যে আগে ব্যাটিং করে বাবরের ফিফটিতে স্বাগতিকরা নির্ধারিত ওভারে ১৭৮ রান সংগ্রহ করে। কাকতালীয় বিষয় হচ্ছে– সর্বশেষ তিন ম্যাচেই আগে ব্যাট করা দলের সংগ্রহ ছিল ১৭৮।
সেই রান তাড়ায় শুরুতেই খেই হারায় কিউইরা। প্রথম ওভারের শেষ ডেলিভারিতে ওপেনার টম ব্লান্ডেলকে বোল্ড করে দেন শাহিন আফ্রিদি। আরেক পাশে থাকা ওপেনার টিম সাইফার্ট তোলেন ঝড়। ফিফটি করেন তিনি মাত্র ২৯ বলে। শেষ পর্যন্ত ৩৩ বলে ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় সাইফার্ট ৫২ রান করেন। যার কল্যাণে ৮ ওভার শেষে সফরকারীদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮০ রান। এরপর আবার পথ হারায় নিউজিল্যান্ড। পরবর্তী ২৩ রানেই তারা ৪ উইকেট হারায়। একে একে বিদায় নেন সাইফার্ট (২৩), মার্ক চাপম্যান (১২), মাইকেল ব্রেসওয়েল ও কোল ম্যাককনি (১)।
সেখান থেকে জেমস নিশাম ও জশ ক্লার্কসন নিউজিল্যান্ডকে কক্ষপথে ফেরাতে চেষ্টা করেন। তবে বেশিক্ষণ টেকেননি নিশাম। দ্বিতীয় স্পেলে এসে পরপর দুই বলে নিশাম (৮ বলে ১৬) ও জাকারি ফৌকসকে (০) বিদায় করে দেন আফ্রিদি। শেষদিকে জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১০ বলে ১৫ রানের। এরপর আর কিছু করে দেখাতে পারেনি তারা। অথচ অন্যপ্রান্তে সেট ব্যাটসম্যান ক্লার্কসন ছিলেন। যিনি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ২৬ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩৮ রানে। শেষ ওভারে কিউইদের ১২ রানের প্রয়োজনে মোহাম্মদ আমিরের প্রথম তিন ডেলিভারিতে দুজন ব্যাটসম্যান রানআউট হয়ে যান। আর তাতেই শেষ হয়ে যায় কিউইদের ইনিংস। ৪ বল হাতে রেখেই সফরকারীরা ১৬৯ রানে অলআউট।
পাকিস্তানের হয়ে ৪ ওভারে ৩০ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন শাহিন আফ্রিদি। মাত্র ২১ রানে ২ শিকার উসামা মিরের, এছাড়া এক উইকেট করে নেন ইমাদ ওয়াসিম ও শাদাব খান। আমির ও আব্বাস আফ্রিদিরা বেশ খরুচে ছিলেন, ১২–ইকোনমির বেশি রান দিয়েও তারা উইকেট নিতে পারেননি।
এর আগে টস হেরে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠান কিউই অধিনায়ক ব্রেসওয়েল। ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই সাইম আইয়ুবকে হারায় পাকিস্তান। আরেক ওপেনার বাবর দারুণ ব্যাটিংয়ে এগিয়ে নেন দলকে। দ্বিতীয় উইকেটে উসমান খানের সঙ্গে ৪৫ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়েন তিনি। সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি উসমান, তার ওপর খেলেছেন ধীরগতির ইনিংস। বিদায়ের আগে তিনি ২৪ বলে ৩১ রান করেন। পরে ৩৫ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন বাবর। যদিও তাকে বেশিদূর আগাতে দেননি বেন সিয়ার্স। বোল্ড হওয়ার আগে পাক অধিনায়ক ৪৪ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৯ রান করেন।
মাঝে উইকেটে এসে বলার মতো কিছু করতে পারেননি ইফতিখার আহমেদ (৬)। আগের ম্যাচে ফিফটি করা ফখর জামান এদিনও সেই পথে হাঁটছিলেন। তবে ৩৩ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় থামেন ৪৩ রানের ইনিংসে। ততক্ষণে পাকিস্তানও দেড়শ ছাড়িয়ে যায়। এছাড়া শেষদিকে ৫ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন শাদাব খান। ফলে ৫ উইকেটে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৭৮ রানের।