পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) শিক্ষক ও কর্মচারী সমিতি।
মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে যবিপ্রবির স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু ভবনের সামনে শিক্ষক সমিতি এবং প্রশাসনিক ভবনের সামনে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে যবিপ্রবি কর্মচারী সমিতি।
এতে অচলাবস্থা তৈরি হওয়া দেখা দিয়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
শিক্ষক সমিতির নেতারা বলেন যতদিন আমাদের দাবি মেনে না নেয়া হবে ততদিন এভাবেই আমরা কর্মবিরতি চলমান রাখব। তারা আরও বলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষা এর আওতার বাইরে থাকবে। যবিপ্রবি দুইশতাধিক শিক্ষক কর্মবিরতি পালন করছেন।
যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডক্টর ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, আপনারা জানেন অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীর আগের পেনশন সুবিধা বাতিল করা হয়েছে। এখন থেকে নিজেদের টাকা দিয়েই এই সুবিধা পাওয়া যাবে যা চরম হতাশাজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হয় , দেশের মানুষের জন্য নতুন নতুন উদ্ভাবনে কাজ করে। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কেন টার্গেট করা হল? তিনি বলেন এটি বাস্তবায়ন হলে এই শিক্ষক পেশা তার নিজস্ব স্বকীয়তা হারাবে যার ফলে অযোগ্য রা এই পেশায় আসবে। এবং অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী দেশের বাইরে চলে যাবে। দেশ মেধাবী শিক্ষার্থী হারাবে।
তিনি অবিলম্বে এই বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবি জানান। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ শিক্ষক ফেডারেশনের সাথে এবং প্রয়োজনে যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি আলাদাভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডক্টর নাজমুল হাসান বলেন, পরিকল্পিতভাবেই এবং একটি কুচক্রী মহল বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে নজর দিয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য। সবকিছু ঠিক রেখে কেবল মাত্রায় স্বায়ত্তশাসনের দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে মেধাবীরা এই পেশায় আসতে চাইবেনা এবং অযোগ্যরা এই শিক্ষক পদ দখল করে নিবেন। আজ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা করতে চায় না তারা বিসিএস বই পড়তে চায়। তাদের মাথার মধ্যে বিসিএস বিষয়টা এমন ভাবে ঢুকানো হয়েছে তারা এটা ছাড়া কিছুই বোঝেনা। অবিলম্বে তিনি এই প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জানান।
যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডক্টর কামরুল ইসলাম বলেন, আন্দোলন চলছে চলবে যতদিন দাবি আদায় না হবে ততদিন আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা তিনি দিয়েছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের দাবি অবিলম্বে মেনে নিয়ে এই প্রজ্ঞাপন বাতিল করবেন।
এদিকে সকাল ৯ টায় কাজে যোগ দেয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই কর্মবিরতি পালন করছেন শতাধিক কর্মচারীরা। তারা কেউ তাদের কাজে যোগ দেননি। নেতারা বলেন যতদিন তাদের দাবি মেনে না নেয়া হবে আন্দোলন চলমান থাকবে প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে যাওয়া হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের তাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন। উল্লেখ্য অনেক দিন ধরে বিভিন্ন দাবি নিয়ে একাধিকবার প্রশাসনকে চিঠি দিলেও তাদের দাবি পূরণ না করায় এবার আন্দোলনের ডাক দিয়েছে কর্মচারী সমিতি।
এদিকে শিক্ষক সমিতি ও কর্মচারী সমিতির কর্মবিরতিতে যবিপ্রবিতে অচলাবস্থা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী সহ সকলেই।