‘আমগো এলাকায় এতো পানি। ঘরে থাকার সুযোগ নাই। বাড়িতে আমরা ৪ পরিবার। সবাই পানির তলে। এখন থাকার মতো কোনো অবস্থা নাই। বাচ্চা-কাচ্চা, হাঁস-মুরগি নিয়ে অবস্থা খারাপ। মরলে এক সাথে মরিয়াম (মরবো), আর কি করিয়াম। কোনো দিকে আশ্রয়কেন্দ্রও এখন খালি নাই। সব জায়গার মধ্যে এখন মানুষ আর মানুষ।’
নোয়াখালীর বন্যার পানি ঢুকে ও বৃষ্টিতে লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন এলাকা প্রায় ৪ ফুট পানিতে ডুবে আছে। এতে প্রায় ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। বাড়িঘর ছেড়ে একটু ঠাঁইয়ের জন্য কেউ ছুটছে আশ্রয়কেন্দ্রে। আবার কেউ উজানে স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।
রোববার (২৫ আগস্ট) দুপুরে সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কোমর পরিমাণ পানিতে একটি ভ্যানে করে দুইজন শিশু, একটি ছাগল ও হাঁস-মুরগি নিয়ে রাবেয়া আক্তার নামে এক নারী এসেছেন বাবার বাড়ি। কিন্তু তার বাবার বাড়ির পুরো এলাকাও ৪ ফুট পানিতে ডুবে আছে।
রাবেয়া সদর উপজেলা বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের বাঙ্গাখাঁ গ্রামের জাগিদার বাড়ির ভ্যান চালক আলমগীর হোসেনের স্ত্রী। নিজের বাড়ি পানিবন্দি হওয়ায় তিনি স্বামী-সন্তানসহ হাঁস-মুরগি ও ছাগল নিয়ে মান্দারী যাদৈয়া গ্রামে বাবার বাড়িতে এসেছেন। রাবেয়া যাদৈয়া গ্রামের ওসমান হাজী বাড়ির আব্দুর রবের মেয়ে।
রাবেয়া বেগম বলেন, বাড়িতে প্রচুর পানি। একা থাকতে ভয় হচ্ছে। তাই বাবার বাড়িতে চলে আসছি। বাবার বাড়িও পানিতে ডুবে আছে। তবুও সবাই একসাথে থাকব। মরলে একসাথেই মরবো। বাঁচলে একসাথে বাঁচব।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার (২৩ আগস্ট) থেকে নোয়াখালীর বন্যার পানি লক্ষ্মীপুরে ঢুকতে শুরু করে। শনিবার (২৪ আগস্ট) বিকেল থেকে পানির চাপ বেড়ে যায়। এর মধ্যে লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টিও অব্যাহত রয়েছে। এতে পুরো জেলায় প্রায় ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ১২ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। অন্যরা পানিবন্দি অবস্থায় অনেকেই বাড়িতে রয়েছেন। আবার অনেকে উজানে স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
উপদেষ্টা সম্পাদক: এএসএম মাঈন উদ্দিন পিন্টু
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ তাওহীদুল হক চৌধুরী
ফোন: ০১৭৯১-২৬৭৭২৪, বার্তা বিভাগ: ০১৮৪৮-৩৩০৬৭৮
ই-মেইল : mail.muktokolom24@gmail.com
Copyright © 2025 মুক্ত কলম নিউজ. All rights reserved.