টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে বালাইনাশকের নিরাপদ ব্যবহার ও ঝুঁকি হ্রাসের উপায় বিষয়ক কৃষকদের নিয়ে সচেতনতা মুলক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল ধনবাড়ী উপজেলার হল রুমে ধনবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মাসুদুর রহমান এর সভাপতিত্বে,
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মোঃ ফরিদন হাসান অতিরিক্ত পরিচালক, বালাইনাশক প্রশাসন ও মান নিয়ন্ত্রণ) উদ্ভিদ সংরক্ষন উইং, খামারবাড়ী ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মোঃ সাজ্জাত হোসেন তালুকদার- অতিরিক্ত উপ পরিচালক, ডিএই, টাঙ্গাইল, মোঃ শাহীন আলম, পেস্ট কন্ট্রোল অফিসার, মোঃ মাজেদুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার, ধনবাড়ী, টাঙ্গাইল, আজিজা আক্তার, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার, ধনবাড়ী, টাঙ্গাইল।
বালাইনাশক ব্যবহারের গুরুত্ব এবং ব্যবহারের সচেতনতা-
বালাইনাশক বলতে আমরা সাধারণভাবে ওইসব বস্তুকে বুঝে থাকি যা দ্বারা কৃষিজাত দ্রব্য যেমন- ফসল, মাছ এবং গৃহপালিত পশু-পাখি ইত্যাদির উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বাজারজাতকরণের সময়ে ক্ষতিকর রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ এবং আগাছার উপদ্রব থেকে কৃষি পণ্যগুলোকে সুরক্ষা করে থাকে।
বালাইনাশক যে সকল জীব বা জীবাণুর বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয় তাদের নাম অনুসারে সার্বিকভাবে এদের শ্রেণীবিন্যাস করা হয়, যেমন- আগাছানাশক (আগাছা দমনের জন্য), কীটনাশক (কীটপতঙ্গ দমনের জন্য), ইঁদুরনাশক (ইঁদুরজাতীয় প্রাণী দমনের জন্য), ছত্রাকনাশক (ছত্রাকজনিত রোগ দমনের জন্য), ব্যাকটেরিয়ানাশক (ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ দমনের জন্য) ইত্যাদি। আবার রাসায়নিক গঠনের উপর ভিত্তি করে বালাইনাশককে- জৈব, অজৈব, কৃত্রিম, জৈবিক ইত্যাদি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়। জৈবিক বালাইনাশককে আবার অনুজৈবিক, জৈব রাসায়নিক এবং উদ্ভিজ্জ এই তিন ভাগে ভাগ করা হয়।
বালাইনাশক ব্যবহারের গুরুত্ব-
কৃষি ফসল উৎপাদন করতে গিয়ে যদি বালাইসমূহের বিরুদ্ধে কোনো রকম প্রতিরোধ এবং প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তাহলে ৭০% পর্যন্ত ফলন নষ্ট হতে পারে। আগাছার কারণে গড়ে ৩০-৩৫%, পোকামাকড়ের কারণে ২০-২৫% এবং রোগবালাইয়ের কারণে গড়ে ১৫-২০% পর্যন্ত ফলন নষ্ট হতে পারে। সুতরাং, এখান থেকে বোঝা যায় বালাইকে দমন করে ফসলকে সুরক্ষা করার জন্য বালাইনাশকের গুরুত্ব কতটা অপরিহার্য।
বালাইনাশক ব্যবহারের প্রধান সুবিধা হচ্ছে ফসলের আগাছা, রোগ ও পোকামাকড় দমনের মাধ্যমে ফসলের ফলন ও গুণগতমান বৃদ্ধি পায়। মানুষ গাছপালা, মাছ ও প্রাণিসম্পদের রোগ সৃষ্টিকারী বিভিন্ন জীবাণুর বাহককে (যেমন- মশা, জাবপোকা, সাদামাছি, থ্রিপস ও অন্যান্য) দমন করে রোগের হাত থেকে কৃষিপণ্য ও জীবনকে সুরক্ষা করা যায়। এসব ব্যবস্থাপনার ফলে- কৃষিপণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়, গুণাবলী উন্নত হয় এবং ক্ষতিকর সৃষ্টিকারী বিভিন্ন বালাই দমন হয়।