শুরু হলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। রোববার (৭ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে।
৩০০ আসনের মধ্যে একজন প্রার্থীর মৃত্যুজনিত কারণে ২৯৯ আসনে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে। স্থগিত হওয়া নওগাঁ-২ আসনে পরে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
এবারের নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ না হলেও নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন ও অংশগ্রহণমূলক নয় এমন আখ্যায়িত করা যাবে না বলে মনে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) জাতির উদ্দেশ্য দেয়া ভাষণে নির্বাচনে অনিয়ম ঠেকাতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে তার কমিশন।
বিএনপিসহ বেশকিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করলেও, ২৮টি রাজনৈতিক দলের ১ হাজার ৫৩৪ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে আছেন ৪৩৬ জন। রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্রসহ মোট নারী প্রার্থী ৯০ জন।
নির্বাচন কমিশন জানায়, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ২৬৬ জন, জাতীয় পার্টির ২৬৫, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ১৩৫ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) ৬৬ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২ জন, জাতীয় পার্টির (জেপি) ১৩ জন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের ১০ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তবে, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি প্রথমে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু সমঝোতার ভিত্তিতে পরে জাতীয় পার্টিকে ২৬টি আসন ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। এছাড়া, তাদের ১৪-দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও জেপিকে (মঞ্জু) ৬টি আসন ছেড়ে দিয়েছে ক্ষমতাসীনরা।
ভোটের মাঠে না থাকলেও, সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে তারা হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে।
এ অবস্থায় নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দেখাতে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীর বাইরে দলের নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেয় আওয়ামী লীগ। যেসব আসনে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তার বেশিরভাগ প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকার প্রার্থীদের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীর।
নওগাঁ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল ইসলাম মারা যাওয়ার পর ওই আসনের নির্বাচন স্থগিত করে ইসি। ২৯৯ আসনে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ২৪টি।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৮৯ হাজার ২৮৯ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৯ হাজার ৭৪১ ও নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৮ হাজার ৬৯৯। এছাড়া সারাদেশে এবার তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৮৪৯ জন।
এবারই প্রথমবারের মতো ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হচ্ছে। শুধু দুর্গম অঞ্চলের ২ হাজার ৯৬৪টি কেন্দ্রে ব্যালট পাঠানো হয় ভোটের আগের দিন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আছেন স্থানীয় ২০ হাজার ৭৭৩ জন পর্যবেক্ষক। এছাড়া প্রায় দুই শতাধিক বিদেশি পর্যবেক্ষক থাকছেন বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে।
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনের সহযোগী হিসেবে গত ৩ জানুয়ারি থেকে দেশের ৬২ জেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা ও বরগুনা এবং ১৯ উপজেলায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে।