দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে প্রবাসী বাঙালি ব্যবসায়ী নুরুল হুদা লিটন (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। তিনি ফেনীর দাগনভূঞার জগৎপুর গ্রামের লাল মোহাম্মদের বাড়ির এবাদুল হকের ছেলে।
শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) দক্ষিণ আফ্রিকার জোহান্সবার্গের হিলবো শহরে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন তিনি। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) পরিবারের সদস্যরা মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, লিটন রাতে স্থানীয় সামিট ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন এ সময় তার পিছন থেকে এক সন্ত্রাসী এসে দুই রাউন্ড গুলি করে পালিয়ে যায়। আশপাশের লোকজনের সাহায্যে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার জানায় গুলি অবস্থায় তার শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে। এতে ঘটনাস্থলে লিটনের মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের চাচাতো ভাই মনির হোসেন সবুজ জানান, শুক্রবার রাতে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ শেষে গাড়িতে উঠতে গেলে সঙ্গে সঙ্গে পূর্ব থেকে ওঁত পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই সে মাটিতে লুটে পড়ে এবং পরে হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) স্বজনদের কাছে তার মৃত্যুর খবর আসে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জীবিকার অন্বেষণে ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমান লিটন। সেখানে নিজে দুটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। সে এবং তার ছোট ভাই মিঠুসহ দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছেন। গত সাত মাস আগে সর্বশেষ দেশে এসেছিলেন তিনি। বাড়িতে তিন তলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট ঘরের নির্মাণ কাজ চলছিল তার। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখে তার বাড়ি এসে বিয়ে করার কথা ছিল।
দাগনভূঞা সদর ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন স্বপন জানান, লিটনের মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মরদেহ দেশে আনতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিবেদিতা চাকমা বলেন, সন্ত্রাসীদের গুলিতে প্রবাসী বাংলাদেশি নিহতের খবরটি জানতে পেরেছি। খুব শীঘ্রই উপজেলা প্রশাসন থেকে নিহতের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হবে। মরদেহ দেশের আনার ক্ষেত্রে পরামর্শ সহ প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে। এছাড়া প্রবাসী কল্যাণ তহবিল থেকে নিহতের পরিবারের জন্য সরকার নির্ধারিত অনুদান যেন খুব তাড়াতাড়ি পায় সে ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।