![](https://i0.wp.com/muktokolom.news/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png?w=696&ssl=1)
একটা গ্রামে গল্টু নামের একটা ছেলে আছে। সে অনেকটাই অলসপ্রকৃতির। পরিশ্রম না করেই সে সফলতাকে ছুঁতে চায়। গ্রামের মধ্যে তাদের একটা ছোট বাড়ি আছে৷ মা, বাবা আর ভাইকে নিয়ে তার পরিবার। তার মা খুবই কুসংস্কার প্রবল।
তাদের বাড়িটি ছিল বেশ পুরনো। অনেকদিন মেরামত করা হয়নি। গল্টুর বাবা ছিল সেই গ্রামের একজন দিনমজুর। দিনে এনে দিনে খাই। তাদের বাড়িটি মেরামত করতে গেলে যা খরচ হবে, তা তাদের সাধ্যের বাইরে। যার কারণে বাড়ি মেরামতের চিন্তা করাও একপ্রকার বোকামি।
বাড়ি পুরনো হওয়ায় বিভিন্ন পোকামাকড়ের উৎপত্তি ঘটে তাদের বাসায়। তাদের মধ্যে ছিল টিকটিকি। যা কিছু সময় পরপর টিক টিক শব্দ করে। গল্টুর মা বিশ্বাস করেন, কোনো কথা বলার পর টিকটিকি যদি টিক টিক শব্দ করে তাহলে ওটা সত্যিই ঠিক।
গল্টু এবার ক্লাস ৯ এ উঠেছে। পড়াশোনায় কিছুটা মনোযোগী হলেও অলসতার কারণে সে পড়তে বসতে চায় না। পড়তে বসলেই নাকি তার ঘুম আসে। তাও পরিবারের কথা ভেবে, তার মায়ের কথা ভেবে সে পড়াশোনা চালিয়ে যায়। তার মনে জেদ আনে যে, পড়াশোনা ভালোভাবে করলেই একদিন সে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে। তার পরিবারে সুখ- শান্তি এনে দিতে পারবে।
একদিন তার বন্ধুরা মিলে ঠিক করলো তারা সবাই পিকনিকে যাবে৷ গল্টু তার মাকে বলতে আসলো, তার বন্ধুরা পিকনিকে যাচ্ছে। গল্টুও যেতে চাই তাই কিছু টাকার প্রয়োজন। গল্টুর মা বললো, এখনতো আমাদের এত সামর্থ্য নেই যে তোকে পিকনিকে যাওয়ার জন্য টাকা দিবো। তবে আমি বলছি, একদিন তুই অনেক বড় হবি, তুই টাকার উপর ঘুৃমাবি। সঙ্গে সঙ্গে টিকটিকি টিক টিক শব্দ করলো এবং মা বিশ্বাস করতে লাগলো, এটা সত্যি হবে। গল্টু এদিকে খুশির ঠেলায় পড়াশোনাকে বিদায় জানিয়ে দিলো। সে ভাবতে লাগলো, আমিতো একদিন সত্যি সত্যিই বড় মানুষ হবো। তাহলে এই পড়াশোনা করে কি হবে।
এরপর যখন ( ২/৩ মাস পর) তার পরীক্ষা শুরু হলো এবং পরবর্তীতে ফলাফল আসলো। তখন দেখা গেলো, গল্টু পরীক্ষায় একদম কম নম্বর পেয়েছে।
শিক্ষা : টিকটিকির এই টিক টিক শব্দ করাকে এখনো আমাদের গ্রামীণ সমাজে অনেকে বিশ্বাস করে থাকেন। তবে এটি মূলত কুসংস্কার। আপনার সফলতা কখনোই জাদু দ্বারা আসবে না, পরিশ্রম করে যাবেন তাহলেই সফলতা আসবে।
লেখক: প্রিতময় সেন, খাগড়াছড়ি।