মেহেরপুরের গাংনীতে জাহিদ হোসেন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে জমির বিরোধে মহিবুল ইসলাম ওহিদ নামে এক ভাইয়ের হাতে বোন ও ভাবি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জাহিদ ও তার আরেক বোন শামিমা খাতুন আহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাংনী থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম।
শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের সানঘাট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- ওই গ্রামের আব্দুল আজিজের মেয়ে জোসনা খাতুন এবং আজিজের ছেলে জাহিদ হোসেনের স্ত্রী জাকিয়া খাতুন। তিনি গাংনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। ওহিদ সানঘাট পল্লী উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক।
আহতরা কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল করিম, গাংনী থানার ওসি তাজুল ইসলাম, গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, মহিবুল ইসলাম ওহিদ ও তার মেজ ভাই জাহিদ হোসেনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ ছিল। শনিবার বাড়ির পাশে পৈত্রিক পুকুরে মাছ ছাড়াকে কেন্দ্র করে দুই ভাইয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। তখন ওহিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসেন বোন-ভাবি। এতে উত্তেজিত হয়ে ওহিদ ঘরে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে বোন শামিমা ও ভাবি জাকিয়া খাতুনকে কোপালে ঘটনাস্থলেই তারা মারা যান। পরে পুলিশ মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল এলাকা থেকে মহিবুল ইসলাম ওহিদকে গ্রেপ্তার করে।
নিহত জোসনার চাচাতো ভাই টোকন বলেন, পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে ভাই-বোনদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ মামলা-মোকদ্দমা চলে আসছিল। আজ সকালে নিহত জোছনা খাতুন ও শামীমা খাতুন বাবার এক একর ২৭ শতক জমির পুকুরে মাছ ছাড়তে এসেছিলেন। সকালে সবাই মিলে বাড়িতে মিমাংসায় বসেন। এক পর্যায়ে জোছনা, জাহিদ ও তার স্ত্রী জাকিয়া পুকুরে মাছ ছাড়তে যান। এ সময় মহিবুল ইসলাম ওহিদ ধারালো রামদা দিয়ে তাদের কোপাতে শুরু করেন। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন জোছনা ও জাকিয়া।
নিহত জাকিয়া খাতুনের ভাই মেজবাহুর রহমান তোহা বোনকে কুপিয়ে হত্যা করায় মহিবুল ইসলাম ওহিদের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে বলেন, এ ঘটনায় ওহিদুলকে আসামি করে হত্যা মামলা করবে তার পরিবার।
জাকিয়া খাতুনের বোন ডালিয়া খাতুন বলেন, জমিজমা নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে ওরা গাংনী শহরে বসবাস করত। গ্রামে খুবই কম যেত। গেলেই ঝগড়া-বিবাদ লাগত।
গ্রামবাসী ফারুক আহমেদ বলেন, ওহিদ বেকার ছিল। কখনও স্কুলে, কখনো এনজিওতে চাকরি করেছে। কিন্তু কোনো চাকরিই বেশিদিন টিকেনি। বেকার হওয়ায় জমি বিক্রি করত আর সেটা নিয়ে বাড়িতে হট্টোগোল হত।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গাংনী থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর ঘাতক মহিবুল ইসলাম অহিদ পালিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় অভিযান চালিয়ে মেহেরপুর সদরের আমঝুপি বাজার থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। মহিবুল ইসলাম অহিদ আহত হওয়ায় তাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
মেহেরপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল করিম বলেন, দুই নারীকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পৈত্তিক সম্পত্তির ভাগ নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে আমরা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি।
উপদেষ্টা সম্পাদক: এএসএম মাঈন উদ্দিন পিন্টু
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ তাওহীদুল হক চৌধুরী
ফোন: ০১৭৯১-২৬৭৭২৪, বার্তা বিভাগ: ০১৮৪৮-৩৩০৬৭৮
ই-মেইল : mail.muktokolom24@gmail.com
Copyright © 2024 মুক্ত কলম নিউজ. All rights reserved.