আওয়ামী লীগ সরকার পতনের প্রায় আড়াইমাস পর চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে মিছিল করেছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের একটি অংশ।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাত ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে ২০-৩০ জন তরুণ জামালখান এলাকায় কয়েকমিনিটের মিছিল করে সটকে পড়েন। প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেছেন মিছিলে অংশ নেওয়া অনেকের কাছেই অস্ত্র ছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিছিলের ৩৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। মিছিলের তিনটি ভিডিও আওয়ামী লীগের ভ্যারিফাইড পেজেও শেয়ার করা হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, সামনে কয়েকটি মোটরসাইকেল ধীরগিততে এগিয়ে চলছে। সেগুলোর পেছনে ২০-৩০ জনের মিছিল। তাদের বেশিরভাগেরই মুখে ছিল মাস্ক। সেখানে পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে ‘শেখ হাসিনার ভয় নেই, রাজপথ ছাড়ি নাই’-স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের। দ্রুতই তারা মিছিলটি শেষ করে চলে যান।
মিছিলে কারা নেতৃত্ব দিয়েছেন বা কারা অংশ নিয়েছেন সেটি তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে ওই এলাকায় জামালখান ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের একচ্ছত্র দাপট ছিল। ধারণা করা হচ্ছে মিছিলে যোগ দেওয়ারা সবাই তারই কর্মী।
সরকার পতনের আগেরদিন ৪ আগস্ট সুমনের সরাসরি নির্দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করতে দেখা যায় আসকারদীঘি পাড় এলাকায়। সরকার পতনের পর আড়ালে চলে যান এই আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়েছেন বলেও খবর রটেছে।
এদিকে ছাত্রলীগের মিছিলের খবর ছড়ালে ঘটনাস্থলে শিবিরের নেতাকর্মীরা যান বলে জানা গেছে।
ছাত্রলীগের মিছিল করার ঘটনায় ছাত্র-জনতার মধ্যেও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। তাদের অনেকেই ফেসবুকে এ নিয়ে লেখালেখি করছেন। বলছেন, শান্তিপূর্ণ মিছিলে গুলি চালিয়ে শিক্ষার্থীদের হত্যা করা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই সুযোগে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে তারা দেশের পরিস্থিতি পুনরায় অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে।
এই ঘটনায় কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই প্ল্যাটফর্মের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ এই ঘোষণা দিয়ে রাত ২টায় বলেন, ‘খুনি হাসিনাকে পুনর্বাসনের জন্য শহীদের রক্তরঞ্জিত রাজপথে স্লোগান দেওয়ার প্রতিবাদে শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় জামালখানে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে। দলমত নির্বিশেষে সকল ছাত্র-জনতাকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে পুনরায় নেমে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’