সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) দীর্ঘ ১০ বছর পর চতুর্থ সমাবর্তন আয়োজনের লক্ষ্যে নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা ছাড়াই নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা প্রশ্ন তুলে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, সমাবর্তনের তারিখ জেনেই নিবন্ধন শুরু হয়। আমরা এটাই দেখে আসছি। তারিখ না জানিয়ে নিবন্ধন শুরু অপেশাদার সিদ্ধান্ত। এটা প্রশাসনের স্বচ্ছতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তারিখ না জেনে নিবন্ধন করে যদি দ্রুত বা এ বছরে সমাবর্তন না হয়, তার দায়ভার কে নিবে?
বর্তমানে বিদেশী অবস্থানরত কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, আমরা যারা দেশের বাইরে আছি, তাদের জন্য তারিখ জানাটা খুব দরকার। চাইলেই যেকোন সময় আমরা দেশে ফিরতে পারি না। কর্তৃপক্ষকে এ সকল বিষয় মাথায় রাখা উচিত। আমরা দ্রুতই সমাবর্তনের তারিখ জানানোর জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। অন্যথায় হয়তো অনেকেই অংশ নিতে পারবো না।
সমাবর্তনের অতীত ইতিহাস বিশ্লেষণ করে জানা যায়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিবন্ধন শুরুর সময় বা আগেই তারিখ ঘোষণা হয়। তবে বিপরীত ঘটনাও আছে। গত বছর সেপ্টেম্বরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নির্দিষ্ট তারিখ না জানিয়েই (সম্ভাব্য নভেম্বর) সমাবর্তনের নিবন্ধন শুরু করে। ৫ অক্টোবর নিবন্ধন শেষ হয়। তবে ১ নভেম্বর অনিবার্য কারণ দেখিয়ে সমাবর্তন স্থগিত করে প্রশাসন; যা আজও অনুষ্ঠিত হয়নি।
এদিকে নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা না করলেও আগামী জুনের শেষে সমাবর্তন আয়োজনের ব্যাপারে আশাবাদী গবি প্রশাসন। তারই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে বলে জানান তারা। গত ২ মে থেকে শুরুর কথা থাকলেও প্রযুক্তিগত জটিলতায় নিবন্ধন শুরু হয় ৬ মে; যা চলবে আগামী ২ জন পর্যন্ত।
তারিখ নিয়ে বিতর্কের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, ‘সমাবর্তনের তারিখ আমাদের হাতে নেই। রাষ্ট্রপতি তারিখ দিলে আমারা জানাতে পারবো। যেহেতু তারা আয়োজনের অনুমতি দিয়েছে, তাই আমরা সকল কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছি। তারিখের জন্য বসে থাকলে সবকিছু সম্পন্ন করার জন্য হাতে পর্যাপ্ত সময় নাও পেতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ১০ বছরের অপেক্ষার অবসান হবে। আমরা চাই সুন্দর একটি সমাবর্তন উপহার দিতে। এজন্য আমরা আলাদা কমিটি করেছি। আলাদা ব্যাংক হিসাব আছে। এখানে স্বচ্ছতার অভাব হবে না। এজন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।’
তারিখ ছাড়াই সমাবর্তনের নিবন্ধন শুরুর বিষয়ে ইউজিসির বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পরিচালক মো. ওমর ফারুখ বলেন, ‘নিবন্ধন না করলে সমাবর্তন কিভাবে হবে? প্রস্তুতি ছাড়া কিভাবে করবেন? সমাবর্তনের সমস্ত প্রক্রিয়া সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে একইভাবে সম্পন্ন হয়। শুরুতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরাবর আবেদন করতে হয়। সেখানে অনুমতি পেলে পরবর্তীতে তার নির্ধারিত তারিখে তিনি নিজে বা তার মনোনীত ব্যক্তি সমাবর্তনে অংশ নিবেন।’