গত বিপিএলে সেরা খেলোয়াড় ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। শুধু বিপিএল বললে ২০২৩ এর শান্তকে কিছুটা খাটো করেই রাখা হবে। বরং বলা ভালো, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ দলেরই সেরা ব্যাটার ছিলেন শান্ত। বিশ্বকাপের অধ্যায় বাদ দিলে বাংলাদেশের হয়ে শান্ত ছিলেন দুর্দান্ত। তারই অধিনায়কত্বে দেশের মাটিতে প্রথমবার নিউজিল্যান্ডকে টেস্ট হারায় টাইগাররা।
এমনকি বছরের শেষপ্রান্তে নিউজিল্যান্ডের মাটিতেও বলার মত সাফল্য পেয়েছিল টাইগাররা। সেখানেও অধিনায়ক ছিলেন এই শান্ত। চলতি বছরের শুরুতে তাই এই ব্যাটারকে নিয়ে স্বপ্নটা ছিল বেশ বড়। কিন্তু ২০২৪ বিপিএলে শান্তর অবস্থা যেন পুরোই মুদ্রার উলটো পিঠ। এখন পর্যন্ত বিপিএলে নেই কোন ফিফটি। দশ ইনিংস খেলে একক অঙ্কের ঘরে আউট হয়েছেন ৬ বার।
২০২৪ বিপিএলের অবশ্য শুরুটা ভালোই করেছিলেন শান্ত। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে করেছিলেন ৩৬। পরের ম্যাচে বড় প্রতিপক্ষ রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে তার রান ১৪। এই শেষ। এরপর আরেকবার দুই অঙ্কের ঘরে যেতে তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে আরও ৫ ইনিংস। চট্টগ্রামের ও কুমিল্লার বিপক্ষে ৫, বরিশালের বিপক্ষে ৯ রানের পর ঢাকার বিপক্ষে করেছেন ৩ আর রংপুরের বিপক্ষে রান ছিল ১।
লম্বা সময় পর দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে এসে পেয়েছিলেন ৩৩ রান। এরপর খুলনার বিপক্ষে ১৮ রানের ইনিংস খেলেন। আজ শনিবার ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে আবার মেরেছেন ডাক।
বাংলাদেশ দলের নতুন অধিনায়ক শান্তর রান তাই ১০ ম্যাচ শেষে মোটে ১২৪, গড় মাত্র ১২.২৫। এবারের বিপিএলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় সেরা ৩০ ব্যাটারের মধ্যে সর্বনিম্ন গড় শান্তর। অথচ বাংলাদেশের কন্ডিশনে অপরিচিত উইল জ্যাক ৪ ম্যাচেই করে ফেলেছেন ১৫৭ রান। অজি ব্যাটার টম ব্রুস ৫ ম্যাচে করেছেন ১৫৩ রান।
অথচ ২০২৩ বিপিএলে এই শান্তই ছিলেন বিপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে ১৫ ম্যাচে ৩৯.৬৯ গড়ে রান করেছিলেন ৫১৬। ছিল চারটি হাফ সেঞ্চুরি। স্ট্রাইক রেট ছিল ১১৬.৭৪; কিন্তু এবার স্ট্রাইক রেট ১০০ এর নিচে।
এমনকি সিলেটের কোচ রাজিন সালেহর কণ্ঠেও ঝরলো আক্ষেপ। সিলেটের টানা ব্যর্থতার পেছনে শান্তর ব্যাটে রান না থাকাকেই বড় করে দেখছিলেন তিনিও। ঢাকাপোস্টের সঙ্গে আলাপকালে বলেছিলেন, ‘আমাদের শান্ত রান করতে পারছে না। গেল বছর শান্ত অনেক রান করেছে। সে রান না করায় আমরা পিছিয়ে গিয়েছি।’
বিপিএলের এবারের আসরে সিলেটের বিদায় প্রায় নিশ্চিত। ফরচুনের বরিশালের বিপক্ষে ম্যাচের পর তাদের হতে থাকবে আর দুই ম্যাচ। যেখানে প্রতিপক্ষ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স এবং খুলনা টাইগার্স। নিজেদের ফর্ম ফিরে পেতে শান্ত সেই দুই ম্যাচ কতটা কাজে লাগাতে পারেন, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।