অবশেষে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুবিধা বাতিল করেছে সরকার।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে এ সংক্রান্ত একটি সংবিধিবদ্ধ নিয়ন্ত্রক আদেশ (এসআরও) জারি করা হয়েছে। এনবিআরের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আদেশটি আজকের মধ্যেই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে বলে জানা গেছে।
এনবিআর সূত্র জানায়, এ আদেশের ফলে শেয়ার মার্কেট, নগদ, ব্যাংকে থাকা অর্থ, ফাইন্যান্সিয়াল স্কিম অ্যান্ড ইন্সট্রুমেন্টসহ সব ধরনের আমানতের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা বৈধ করার সুবিধা বাতিল হলো। এসব ক্ষেত্রে কালো টাকা সাদা করতে হলে এখন প্রযোজ্য কর, যা সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ– সেটি দিতে হবে এবং ওই প্রদেয় করের ওপর ১০ শতাংশ জরিমানা দিতে হবে।
এছাড়া, ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুবিধা বাতিল হলেও এলাকা ভিত্তিক নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে ফ্ল্যাট, বাড়ি ও জমি কেনার ক্ষেত্রে সাদা করার বিদ্যমান সুবিধা চলমান থাকছে।
চলতি বছরের জুলাই মাসে অনুমোদিত ২০২৪–২৫ অর্থবছরের বাজেটে সম্প্রতি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা বৈধ করার নিয়ম চালু করে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ১০ শতাংশ কর পরিশোধ সাপেক্ষে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিল তৎকালীন সরকার। চার বছর পর আবারও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়।
তৎকালীন সরকারের এ সিদ্ধান্ত তখন তীব্র সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছিল। কারণ বৈধ করদাতাদেরকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত আয়করের পাশাপাশি অতিরিক্ত সারচার্জ দিতে হয়।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০–২১ অর্থবছরে মোট ১১ হাজার ৮৩৯ জন প্রায় ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বৈধ করেছিলেন, যা এক বছরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এনবিআর ওইসব বিনিয়োগ থেকে দুই হাজার ৬৪ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছিল।
দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কালো টাকা সাদা করার বিতর্কিত পদ্ধতিটি বাদ দেওয়ার উপায় খুঁজছিল অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন সরকার গঠনের পর গত ২৮ আগস্ট রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় কালো টাকা সাদা করার বিধান বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়।
এর আগে ২৭ আগস্ট রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর সদরদপ্তরে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠকে এনবিআর কর্মকর্তারা কালো টাকা সাদা করার সুবিধা বাতিলের সুপারিশ করেছিল।