নির্বাচিত করলে যদি ৫ বছরে এলাকার জন্য কাজ না করেন, তাহলে পরেরবার ভোট চাইতে গেলে তাকে ধাক্কা দিয়ে এলাকা থেকে বের করে দেওয়ার কথা বলেছেন রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। রোববার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গোদাগাড়ী পৌর এলাকায় প্রচারণায় গিয়ে এক পথসভায় তিনি এ কথা বলেন।
মাহিয়া মাহি বলেন, ‘আমার কৃষক ভাইয়েরা যারা পানির জন্য চাষবাস করতে পারছে না, মা-বোনরা রান্না করতে পারছে না, সেই সমস্যার আমি সমাধান করব। ৫ বছরে যদি আমি কিছু করতে না পারি, তাহলে পরেরবার যখন ভোট চাইতে আসব তখন আমাকে ধাক্কা মেরে এলাকা থেকে বের করে দেবেন। আমাকে শুধু ৫ বছরের জন্য সুযোগ দিয়ে দেখেন। আর কিছু না পারি, আমি সবাইকে সম্মানটা করবো।’
মাহিয়া মাহি বলেন, ‘প্রকাশ্যে দরকার নেই মাহি মাহি করা। প্রকাশ্যে দরকার নেই ট্রাক ট্রাক করার। আমি চাই, মনের ভেতরে ট্রাককে গেঁথে নিন। ভোটের দিন ৭ তারিখে সিলটা ট্রাকে দিন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আপনাদের সন্তান মাহিয়া মাহি। আমি কিন্তু আপনাদেরই সন্তান। ১৫ বছরে তো একটা পুরুষ দিয়ে দেখেছেন। এবার কোনো পুরুষ মানুষকে না দিয়ে আপনাদের ছোট বোনকে দায়িত্ব দিয়ে দেখেন সে আপনাদের জন্য কি কি করতে পারে। দিবেন না?’
মাহিয়া মাহি আরও বলেন, ‘আমার ভোটে অংশগ্রহণ করার প্রথম কারণ হচ্ছে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ওই চৌধুরীর (ওমর ফারুক চৌধুরী) বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। চৌধুরী কাউকে সম্মান দেয় না। শিক্ষককে সম্মান দেয় না। তার নেতাকর্মীকে সম্মান দেয় না। সেই জন্য আমরা তাকে চাই না।’ এ সময় উপস্থিত লোকজন মাহির কথায় ‘ঠিক ঠিক’ আওয়াজ তোলেন।
নির্বাচিত হলে প্রতিমাসে অন্তত একবার সব এলাকায় যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এই তারকা অভিনেত্রী বলেন, ‘আমরা চাই, এমন একটা মানুষ নির্বাচিত হবে যে আমাদের সুখ-দুঃখে পাশে থাকবে। আর মাসে একবার হলেও কাছে এসে সমস্যার কথা শুনবে। আমাকে যদি আপনারা নির্বাচিত করেন তাহলে কথা দিচ্ছি, মাসে অন্তত একবার আপনাদের কাছে আসব, পাশে বসব। আপনাদের দুইটা সুখ-দুঃখের কথা শুনব। ১০০টা না হোক, একটার সমাধান দিব ইনশাল্লাহ। আমার পাশে আর কেউ থাকুক আর না থাকুক, আমার মা বোনরা আছে। আমার ভাইয়েরা আমার পাশে আছে। যে শিক্ষকেরা নির্যাতিত-অসম্মানিত হয়েছে, সেই শিক্ষকেরা আমার পাশে আছে।’
নির্বাচিত হলে রাজশাহী সিটির মতো গোদাগাড়ী-তানোরকে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে মাহি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সারা দেশকে কি করেছেন? এবার তানোর-গোদাগাড়ীতে একটা নারীকে দিয়ে দেখেন। রাজশাহী সিটিটা দেখেন কত সুন্দর! লিটন ভাই (মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন) কি করেছেন রাজশাহীকে দেখেন না? সারা বাংলাদেশের মধ্যে রাজশাহী সুন্দর। আমাদের গর্ব। রাজশাহী সিটির সেই সৌন্দর্য্য নিয়ে আসব ইনশাল্লাহ।’
মাহিয়া মাহি এ দিন দুপুর থেকে গোদাগাড়ী পৌরসভার প্রতিটি মোড়ে মোড়ে গিয়ে ট্রাক প্রতীকের প্রচারণা চালান। তিনি যাওয়ামাত্র নানা বয়সী মানুষ তার গাড়ি ঘিরে ধরেন। সিনেমার তারকাকে কাছে পেয়ে অনেকে খুশিতে আটখানা হয়ে ওঠেন। ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।