বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধ-হরতালের সময় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ট্রেনের নিরাপত্তায় র্যাব কমলাপুর রেলস্টেশনে ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করেছে। ট্রেন ছাড়ার আগে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে করা হবে স্ক্যানিংও।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করা হয়।
এর আগে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, কমলাপুর রেলস্টেশনে এখন থেকে ডগ স্কোয়াড কাজ করবে। স্টেশন ছাড়ার আগে প্রতিটি ট্রেনে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে স্ক্যানিং করা হবে। মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনায় গোয়েন্দা নজরদারি চলছে। নাশকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার আছে র্যাব। এখন থেকে সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে।
তিনি আরও বলেন, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয়ার ঘটনায় চার-পাঁচজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুজন বিরোধীদলের কর্মী। তাদের সঙ্গে তাদের সঙ্গে দুজন ভাসমান মাদকসেবীও ছিলেন। দু-একদিনের মধ্যে সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে। সবাই নজরদারিতে আছে।
এদিকে, নেত্রকোনা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয়ার দুটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দুটি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে সৈনিক ক্লাব- প্রায় দুই কিলোমিটারের দূরত্বের মধ্যেই আগুন দেয়া হয় ট্রেনটিতে।
এক মিনিট ৫৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, ট্রেনটি ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন অতিক্রম করছে। এ সময় কোনো ট্রেনে আগুনের দৃশ্য ছিল না। এক মিনিট ৩২ সেকেন্ডের আরেকটি সিসিটিভি ফুটেজ দেখা যায়, ট্রেনটি অতিক্রম করছে রাজধানীর সৈনিক ক্লাব এলাকা। এ সময় একটি বগিতে আগুন জ্বলছে।
মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়। আপাতত মামলাটি রেলপুলিশের কাছে থাকলেও ছায়া তদন্ত করছে একাধিক সংস্থা।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ভোরে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের বগিতে আগুন ধরিয়ে দেয় হরতালকারীরা। ভোর ৫টা ৪ মিনিটে খবর পেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টার পর পৌনে ৭টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে একটি বগি থেকে মা-ছেলেসহ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতেরা হলেন: নাদিরা আক্তার পপি (৩৫) ও তার ছেলে ইয়াসিন (৩), রশিদ ঢালী ও খোকন।
এদিকে বৃহস্পতিবার মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, ট্রেনে আগুন লাগানো রাজনৈতিক কোনো পার্ট না। এটা এক ধরনের দুর্বৃত্তায়ন। যারা ট্রেনের বগিতে আগুন লাগিয়েছে তারা ছাড় পাবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ডিবি পুলিশ কাজ করছে। অনেকের নাম পেয়েছি, আশা করছি তাদেরকে দ্রুতই গ্রেফতার করা হবে।