একসঙ্গে তিন সন্তানের বাবা-মা হয়েছেন আবু বকর ছিদ্দিক পিয়াস ও মারজান আক্তার। এতে খুশি হলেও দিনমজুরের আবু বকরের চিন্তা এখন হাসপাতালের বিল নিয়ে।
রোববার দুপুরে নোয়াখালী জেলা শহরের আমেরিকান স্পেশালাইজড হসপিটাল কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র নিতে তাদের ৬৫ হাজার টাকার বিল দিতে বলেন। এর আগে গত ৯ মার্চ (শনিবার) সকালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিন শিশুর জন্ম হয়। নবজাতক দুই মেয়ে ও এক ছেলে। তাদের নাম রাখা হয়েছে- ইয়াশ, আয়েশা ও তানিশা।
হাসপাতালের এই বিল মেটানোর মতো অবস্থা নেই বলে জানান দিনমজুর আবু বকর ছিদ্দিক পিয়াস।
তিনি বলেন, আমি একটা ভাতের হোটেলে কাজ করি। যেদিন কাজ থাকে সেদিন টাকা পাই। যখন কাজ থাকে না তখন বসে থাকি। বর্তমানে রমজান মাস, তাই ভাতের হোটেলও বন্ধ। তিন সন্তানের মুখ দেখে খুব খুশি হয়েছি। যা টাকা ছিল সিজার করার আগে ওষুধ ও বিভিন্ন সামগ্রী কিনতেই শেষ হয়ে গেছে। ক্লিনিকের বিল ৬৫ হাজার টাকা দিতে হবে। সেটা কীভাবে দেব, এটা নিয়ে চিন্তায় পড়েছি। আমার স্ত্রীর ইনফেকশন হয়েছে।
প্রসূতির মা শিল্পী বেগম বলেন, আমার মেয়ের প্রথম সন্তান ওসমান গনি দেড় বছরের মাথায় পানিতে পড়ে মারা গেছে। তারপর মেয়ের এক সঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম হয়েছে। আমরা খুব খুশি। আমরা গরিব মানুষ। তাই হাসপাতালের বিল দিতে পারছি না।
আমেরিকান স্পেশালাইজড হসপিটালে ব্যবস্থাপক কঙ্কন পাঠক বলেন, ৯ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। এতে বিল হয়েছে ৮৫ হাজার টাকা। হাসপাতাল ছাড় দিয়ে ৬৫ হাজার টাকা বিল করা হয়েছে। আসলে আমরাও জানি তাদের আর্থিক অবস্থা ভালো না। কিন্তু তিনটা নবজাতক হওয়ায় বিলটা বেড়ে গেছে।
চিকিৎসক ইসমত আরা পারভিন তানিয়া বলেন, সবাই ভালো আছে । কোনো অসুবিধা নেই। তবে প্রথম সন্তান হওয়ার সময় প্রসূতি করোনা আক্রান্ত ছিলেন। তখন সেলাইয়ে ইনফেকশন হয়েছিল। এবারও তাই হয়েছে। তারপরও নবজাতকদের দেখভালের প্রয়োজন আছে। তারা দিনমজুর বাবার ঘরে জন্ম নিয়েছে। দিনমজুর বাবা তাই হিমশিম খাচ্ছে । আমি আমার পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা করেছি। যদি বিত্তবানরা এগিয়ে আসেন তাহলে দিনমজুর বাবার খুব উপকার হতো।